স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মূল কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ রূপ বাস্তবে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২১, ১৯:৩২ |  আপডেট  : ১৩ মে ২০২৪, ০২:১৯

পদ্মা সেতুর সঙ্গে মিশে আছে বাংলাদেশের মানুষের আবেগ, ভালোবাসা এবং মর্যাদা। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতুর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আবেগটা আরও বেশি।

গেল ১০ ডিসেম্বরের সর্বশেষ স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে পদ্মা সেতুর মূল কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে বাস্তবে পদ্মা সেতু দেখার সুযোগ পাননি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মূল কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ রূপ বাস্তবে দেখলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া থেকে ঢাকা ফেরার পথে হেলিকপ্টার থেকে পদ্মা সেতুর ভিডিও করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তার পাশে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা।

সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জানান সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুঙ্গীপাড়ায় নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাতে সেখানে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা।  

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক সময়ে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা এক সঙ্গে প্রথমবারের মতো মূল পদ্মা সেতুর পূর্ণাঙ্গ রূপ সরাসরি দেখলেন।

এর আগে সর্বশেষ গেল বছরের ১৭ মার্চ টুঙ্গীপাড়া আসা-যাওয়ার পথে হেলিকপ্টার থেকে সরাসরি পদ্মা সেতু দেখেন প্রধানমন্ত্রী। তখনো পদ্মা সেতু পূর্ণাঙ্গ কাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।

পরে গেল বছরের ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায় মূল পদ্মা সেতু। দুই তলা পদ্মা সেতুতে স্প্যানের ওপর কংক্রিটের স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হলেই পিচ ঢালাই হবে। ঢালাইয়ের কাজ, রেলের জন্য স্লিপার বসানোসহ আনুসঙ্গিক কাজ শেষ হলেই স্বপ্নের পদ্মাসেতু যানবাহন চলাচলের উপযোগী হবে।

পদ্মা সেতুর উপর তলায় চার লেনে যানবাহন চলবে এবং নিচ তলা দিয়ে চলবে ট্রেন। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবারও পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুরুতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় থমকে যায় পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ। সম্ভাব্য দুর্নীতির অভিযোগ এনে বেশ কিছু দিন ঝুলিয়ে রাখে বিশ্ব ব্যাংক।

দীর্ঘ টানাপোড়েনে একজন মন্ত্রীকে সরে যেতে হয়। তখনকার সেতু সচিবকে দুদকের মামলায় কারাগারে যেতে হয়। পরে অভিযোগের সত্যতা পায়নি দুদক। কানাডার একটি আদালতেও প্রমাণ হয় পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়নি।

সেই দীর্ঘ টানাপোড়েনের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংককে না করে দেয় এবং নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে বিশ্বব্যাংকের নকশা অপরিবর্তিত রেখে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মূল সেতুর নির্মাণ ও নদী শাসন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরু হয় বিপুল কর্মযজ্ঞ। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত