হাতুড়ে ডাক্তারেই ভরসা

কাউনিয়ায় বড়ুয়াহাট প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রের বেহালদশা

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ৮ জুন ২০২৪, ১৮:০৪ |  আপডেট  : ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:০৮

 কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের বড়–য়াহাট প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রের অবকাঠামো এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা। দীর্ঘদিন ধরে এই সাব-প্রাণিসম্পদ (কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট) অফিস থেকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার হাজার হাজার হাঁস-মুরগী, ছাগল-ভেড়া ও গবাদিপশু খামারীরা। এসব দেখার যেন কেই নেই।

সরেজমিনে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের বড়–য়াহাট প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা গেছে. জরাজীর্ণ অবস্থায় সেখানে ধান সিদ্ধ করা হচ্ছে, বারান্দায় রাখা হয়েছে খড়সহ বিভিন্ন জ¦ালানি, কতদিন ধরে কেন্দ্রটি খোলা হয় না তা অনেকেই বলতে পারে নাই। কাউনিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের একটি সাব-প্রাণীসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র বড়–য়াহাটে থাকলেও তা কোনো কাজে আসছেনা সাধারণ খামারিদের। এই কেন্দ্রটির অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় উপকরণ, ঔষধ ও জনবল সংকটের কারণেই দিন দিন নিমজ্জিত হয়ে পড়ছে সরকারি এই প্রাণি সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র অফিসটি। বর্তমান সরকার দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে বিভিন্ন উপায়ে যেমন, ছাগল-ভেড়া পালন, হাঁস- মুরগীর খামার, গবাদী পশু পালনে মানুষদের আগ্রহী করছেন প্রশিক্ষন দিচ্ছেন, ব্যাংক এবং এনজিওর মাধ্যমে ঋণ দিচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে সরকারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অসচেতনা ও অবহেলায় যেমন আগ্রহ হারাতে বসেছে পশু পালনকারীরা, তেমনি নষ্ট হচ্ছে সাব-প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রের (কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট) ভবন ও সরঞ্জামাদি। কেন্দ্রটি না খোলায় এলাকার কিছু মানুষ ভবনচিকে নিজের সম্পদ মনে করে দখল করে ব্যবহার করছেন। প্রয়োজনীয় জনবল ও উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের দেখভালের অভাবে এই প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানায় সাবেক প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সিঞ্চিতা রহমান থাকা কালিন তার তত্বাবধানে এই কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন বিভিন্ন সেবা যেমন কৃত্তিম প্রজনন, ছাগলের ঠান্ডা কাশিসহ ভ্যাক্সিন দিতে আসতো। বর্তমানে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুমি বেগম আসার পর থেকে কেন্দ্রটিতে তদারকি না করায় যথাযত চিকিৎসা না পেয়ে পশু-পাখি নিয়ে ছুটে চলছে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে এলাকার চাষি ও খামারিদের অনেকই প্রতারিত হচ্ছে। খামারি নজরুল বলেন, আগে এই কেন্দ্র থেকে গবাদিপশুদের চিকিৎসা সহ বিভিন্ন পরামর্শ নিতাম কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এটি বন্ধ থাকায় সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খামারীরা। কাউনিয়া প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে উপজেলায় ১৫জন এ আই টেকনিশিয়ান রয়েছে। এই এআই টেকনিশিয়ানগণ কোথায় কাজ করেন তা বলতে পারে না কেউ। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুমি বেগম বলেন, এই কল্যাণ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকার খবর পেয়ে আমি পরিদর্শন করেছি এবং দায়িত্বে থাকা এ আই টেকনিশিয়ান মোস্তাফিজার কে লিখিত ভাবে নির্দেশ দিয়েছি কেন্দ্রটি খোলা রাখার জন্য। আশা করছি এখন থেকে এই এলাকার মানুষ তাদের পশু পাখির চিকিৎসা সেবা পাবে। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত