স্বাধীনতার পর হারাগাছে চরাঞ্চলের মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে একতা হাট
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১০:১৯ | আপডেট : ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০২
কাউনিয়ার হরাগাছ ইউনিয়নের অবহেলিত একটি জনপদের নাম নাজিরদহ একতা। ষশ্যভান্ডার নামে ক্ষ্যাত একতায় স্বাধীনতার দীর্ঘ পথপরিক্রমায় উন্নয়নের তেমন কোন ছোঁয়া লাগেনি। বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি এমপি এর হস্তক্ষেপে স্বপ্নের একতা সেতু ও বিদ্যুৎ উদ্বোধনের পর চরাঞ্চলের মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার চেষ্টায় চরা লের মানুষের উৎপাদিত ফসল ন্যায্য মূল্যে বিক্রির জন্য তৈরী হয় গ্রোথ সেন্টার। নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে চরা লের মানুষ।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার একতা হাটে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা, শিক্ষক ও ইজারাদারের সাথে কথা বলে জানাগেছে, দীর্ঘদিন যাবত এই চরা লের মানুষকে প্রায় ৬কিঃমিঃ দুরে খানসামা হাটে গিয়ে তাদের কেনা বেচা করতে হতো। তখন তাদের অবর্ননিয় দুর্ভোগ পোহাতে হতো। একতা হাট নামে মাত্র একটি হাট ছিল, হাটে ছিলনা কোন কিছুই। ১৪২৯ বাংলা নববর্ষে ৪৫ হাজার ৬শত টাকায় একতা হাটটি ইজারা নেন মোঃ নুরুল ইসলাম। তিনি হাটটি ইজারা নেয়ার পর থেকে চরা লের মানুষ কে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। একসময়ের একতা হাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বর্তমানে তিনি হাটটিকে নতুন করে সাজিয়েছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার আগমনে হাটিটি এখন মুখরিত। আগে যে হাটে মাছ পর্যন্ত পাওয়া যেত না এখন সেই হাটে হাটে বিক্রি হয়েছে গরু-ছাগল সহ সকল ধরনের কৃষি পন্য। ইজারাদার নুরুল ইসলাম জানান, আবুল কাশেম মন্টু এই হাটের জন্য ২০শতক জমি দান করেন ২০০০ সালে, এই হাটের প্রথম ইজারাদার ছিলেন সমশের আলী মন্ডল। ২০ শতক জমিতে হাট হয়না বলে হারাগাছ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান পলাশ এর ঐকান্তিক চেষ্টায় ২০১৯ সালে ফিরোজ মন্ডল ১২শতক জমি দান করেন। এর পর ২০২১ সালে জেলাপ্রশসন হাট উন্নয়নে কাজ শুরু করে।
বর্তমান ইজারাদার নুরুল ইসলামের স্বপ্ন এই হাটটিকে ক্রেতা-বিক্রেতার সর্বপ্রকার সুযোগ সুবিধা দিয়ে কাউনিয়া উপজেলায় সর্বচ্চ রাজস্ব আয়ের হাটে পরিনত করা। তাকে সহযোগিতা করছে একতা হাট বণিক সমিতি সহ উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার ও থানা প্রশাসন। একতা হাটে আসা নাজিরদহ একতা উচ্চ বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী জানান, আমি চাই একতা হাটটি আবার তার পূর্ব ঐতিহ্য ফিরে পারে, ক্রেতা বিক্রেতার কলকাকলিতে ভরে উঠবে হাটটি। কৃষকের উৎপাদিত পন্য কষ্ট করে আর অন্য হাটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হবে না। এই হাটেই তারা ন্যয্য মূল্যে বিক্রি করতে পারবে। কাচামাল বিক্রেতা শহিদুল জানান, বর্তমানে হাটে আগের চেয়ে বেচা বিক্রি অনেক ভাল হচ্ছে।
রসুন বিক্রেতা সোলেমান জানান, তাকে আর অন্য কোন হাটে যেতে হচ্ছে না রসুন একতা হাটেই ন্যয্য মূল্যে বিক্রি করতে পাচ্ছে। গরু ব্যবসায়ী ইব্রাহিম জানান, এই হাটে তারা গরু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন, অন্য হাট গুলোর মতো এই হাটে তেমন কোন খরচ নাই। গরু ক্রেতা জাকির হোসন জানান, এই হাটে সে কম দামে গরু কিনতে পেরেছে এবং তেমন কোন খরচ দিতে হয়নি। বর্তমানে একতা হাট চরা লের মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত