পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র

সমুদ্রপথে মিয়ানমারের সেনাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪০ |  আপডেট  : ৩ মে ২০২৪, ২০:৪১

মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ (বিজিপি) বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সমুদ্রপ‌থে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সে‌হেলী সাবরীন।

বৃহস্প‌তিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তা‌হিক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ‌্য জানান। সে‌হেলী সাবরীন ব‌লেন, মিয়ানমা‌রের চলমান সংঘাতের কার‌ণে বাংলা‌দে‌শে আশ্রয় নেওয়া সেনা সদস‌্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তা‌দের গভীর সমুদ্র দিয়ে দে‌শে ফেরত পাঠানো হবে।

কাউকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বললেও কেন বিজিপি ও অন্যরা ঢুকছে, মিয়ানমার সেনাদের নৌরুটে ফেরত নিতে চাইলেও আমরা কেন বিমানে পাঠাতে চাচ্ছি— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি ব‌লেন, মিয়ানমার সরকারের নিয়মিত বাহিনী বিজিপি সদস্যদের আশ্রয়দান এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়াকে এক করে দেখা ঠিক হবে না।

সে‌হেলী সাবরীন বলেন, আশ্রিত বিজিপি সদস্যদের নিরাপদ দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রধান বিবেচ্য বিষয়। বিমান বা নৌরুটের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ না কিংবা পূর্বশর্তও না। যত দ্রুত সময় তাদের প্রত্যাবাসন করা সম্ভব, সেটা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ এমন প্রস্তাব দিয়েছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ব‌লেন, বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে তাদের প্রত্যাবাসন চায়। এখানে সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। আশা করা যায়— তাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে, সেটা আকাশ কিংবা বিমানযোগে। সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে, তাদের নিরাপদে ফেরত পাঠানো।

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কারণ থাকার প্রশ্ন অবান্তর— এমন মন্তব্য করে তি‌নি ব‌লেন, সম্প্রতি ভারতেও মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল। ভারত থেকে তারা নিজ দেশে ফিরে গেছেন।

মুখপাত্র ব‌লেন, একটি নিয়মিত বাহিনীর বিপদগ্রস্ত সদস্য হিসেবে তারা বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় নিয়েছেন এবং প্রথমদিন থেকেই মিয়ানমার সরকার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে।

মিয়ানমারের সেনাদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি ব‌লেন, মিয়ানমারের সরকার তাদের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে এরই মধ্যে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গতকাল বিকেলে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আশা করা যাচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।

বাংলা‌দেশ মিয়ানমা‌রে স্থিতিশীলতা দেখ‌তে চায় জা‌নি‌য়ে মুখপাত্র ব‌লেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মিয়ানমারের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বাংলাদেশ।

মিয়ানমারের চলমান সংঘাতে বাংলাদেশ যে কঠিন ভূরাজনৈতিক সমীকরণে পড়েছে তা থেকে উত্তরণে কী ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে জান‌তে চাইলে সে‌হেলী সাবরীন বলেন, এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত। তবে এতে বাংলাদেশের জনগণ, সম্পদ কিংবা সার্বভৌমত্ব যাতে কোনোভাবে হুমকিতে না পড়ে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত