মোল্লাকান্দিতে জালাল হত্যার নেপথ্যে ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ঘাতকরা অধরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২১, ০৯:৪২ |  আপডেট  : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৩

কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু: আলুর ট্রলির সিরিয়াল নিয়ে হত্যাকান্ডের সূত্রপাত হলেও মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের নতুন আমঘাটা গ্রামের বিস্ফোরিত ককটেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে জালাল বেপারীর হত্যাকান্ডের নেপথ্যে রয়েছে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। গ্রামবাসী মতে, আলুর ট্রলির সিরিয়াল নিয়ে হত্যাকান্ডের সূত্রপাত হলেও নেপথ্যে নিহত জালাল বেপারীর ভাই ফারেজ বেপারী আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়া। তাই নির্বাচনের আগেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কৌশলে ইউপি সদস্য সেন্টু বেপারী আলুর ট্রলির সিরিয়ালকে সূত্রপাত বানিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ফারেজকে দুর্বল করতেই জালালকে হত্যা করা হয় বলে মনে করছে গ্রামবাসী। 

স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, প্রতিবছর আলু উত্তোলনের সময় ট্রলি দিয়ে আলুর বস্তা হিমাগারে পৌছাতে একচ্ছত্র আধিপত্যের আবহ তৈরী করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার বিষয়টিকে প্রধান্য দিলেও নেপথ্যে রয়েছে ইউপি সদস্য সেন্টু বেপারীর আধিপত্য বজায় রাখার বিষয়টি। অন্যদিকে হত্যাকান্ডের ৫ দিন পেরিয়েছে মঙ্গলবার। ঘটনার পরপরই থানায় রুজু করা হত্যা মামলার কোনো আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে গত ৩ দিনে পৃথক অভিযানে পুলিশ রোববার নতুন আমঘাটা গ্রাম থেকে ১৫ টি তাজা ককটেল ও টেটা উদ্ধার ও সোমবার দুপুরে বালতি ভর্তি ককটেল উদ্ধার করেছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় সদর থানায় ২৪ জনকে আসামী করে দায়ের করা হত্যা মামলায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত হত্যাকারীরা অধরা থাকায় বাদী পক্ষসহ গ্রামবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে মামলার বাদীর বাড়িসহ নতুন আমঘাটা গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

গত ১৩ মার্চ দুপরে আলুর ট্রলির সিরিয়াল নিয়ে বিরোধের জের ধরে নতুন আমঘাটা গ্রামের মৃত গনি বেপারীর ছেলে জালাল বেপারীকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে প্রতিপক্ষরা। এতে বিস্ফোরিত ককটেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে জালাল বেপারী নামের এক যুবক নিহত হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সেন্টু বেপারী, রাসেল মিজি, রায়হান মিজি, দেলোয়ার মিজি, খালেক শেখ, শিপন মোল্লা, স্বপন মোল্লাসহ ২৪ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা রুজু করা হয়। 

মঙ্গলবার নতুন আমঘাটা গ্রামসহ আশপাশ এলাকা ঘুরে  দেখা গেছে, নিহত জালালের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহতের স্ত্রী স্বামী হত্যার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগে জানান, তার চোখের সামনেই স্বামীকে ককটেল নিক্ষেপ করে হত্যা করেছে। ইউপি সদস্য সেন্টু বেপারীর নির্দেশে রাসেল মিজি প্রথম ককটেলটি তার স্বামী জালালের শরীরের উপর নিক্ষেপের পর দ্বিতীয় ককটেলটি নিক্ষেপ করে খালেক। এরপর মুর্হুমুহু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। 

জালাল হত্যাকান্ড প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. মাহফুজ আফজাল বলেছেন, হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে। এ অভিযানে দ্ইু দফা বিপুল পরিমানের তাজা ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হত্যাকারীরা পলাতক থাকায় গ্রেফতারে বিলম্ব হচ্ছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মজুদ করা ককটেল ছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারেও চেষ্টা চলছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত