বাগেরহাটে প্রতিবেশীর অত্যাচারে গৃহবধু বাড়ি ছাড়া
প্রকাশ: ১০ মে ২০২২, ১৯:০৪ | আপডেট : ৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩২
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিষখালী গ্রামে প্রতিবেশীদের অত্যাচার ও হুমকী-ধামকিতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দিপা রায় (৩৫) নামের এক গৃহবধু। প্রবেশ ও বের হওয়ার একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়া, গৃহবধুকে মারধর, গালিগালাজ ও ঘরের সামনে আগুন দেওয়ার মত ঘটনাও ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ অসহায় ওই গৃহবধুর। এর সাথে সন্তানসহ মেরে ফেলারও হুমকী দিচ্ছে এই প্রতিবেশী। এ অবস্থায় প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন অসহায় ওই গৃহবধু।
দিপা রায় বলেন, চার বছর আগে বিষখালী গ্রামে বিনয় দাসের বাড়ির পিছনে আমার স্বামী বাদল দাসকে পৈত্রিক ভিটা পথ দেওয়ার কথা বলে বাড়ি করে দেয়। তার বাড়ির পাশ থেকেই আমরা মূল রাস্তায় বের হতাম। কিন্তু চাকুরীর সুবাধে আমার স্বামী বাদল দাস ঢাকাতে বাড়ি করার কিছুদিন পর বিনয় দাস আমাকে খারাপ প্রস্তাব দেয়। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, আমাকে মারধর, গালিগালাজ, অশালীন মন্তব্য ও বাড়ির সামনে আগুন ধরিয়েও দিয়েছে বিনয় দাস। বাড়ি দখল করার হুমকী দিয়েছে সে। এক পর্যায়ে আমার বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। তার স্ত্রী অনামিকা দাস ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তন্বি দাসও আমাকে একাধিকবার মারধর করেছে।
যাতায়তের রাস্তা ও শান্তিতে বসবাসের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান রিপন দাস ও মোরেলগঞ্জ থানায় আমি অভিযোগ করি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাধাল বাজার সংলগ্ন চেয়ারম্যান রিপন দাসের অফিসে একটি শালিস ডাকা হয়। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ৩০ এপ্রিল রাতে চেয়ারম্যানের অফিসে আমার স্বামী হাজির হন। এক পর্যায়ে রাত ১০ টায় বিনা কারনে চেয়ারম্যান আমাকে তার অফিসে ডেকে নেয়। আশিষ দাস তাদের প্রতিনিধি ঘোষনা দেয় বিনয় দাস তাদের কখনো পথ দিবেন না। চেয়ারম্যান রিপন দাস বিনয় দাসের পক্ষ নিয়ে পথের কোন সমস্যা সমাধানের কথা না বলে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। বিনয় দাসের কাছে উপস্থিত লোকজনের সামনে আমাকে ¶মা চাইতে বলেন চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের এই অন্যায় বিচার মানতে না পেরে আমরা বাড়িতে চলে আসি। এরপর থেকে বিনয়, তার ভাই, স্ত্রী ও মেয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমার বাড়িতে এসে মারার চেষ্টা করে। আমি এই বাড়িতে থাকলে ছেলেসহ আমাকে মেরে ফেলার হুমকী দেয়। এই অবস্থায় আমার সন্তান ও আমার জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। বাড়ি প্রবেশের রাস্তা ও বিনয় দাসের অত্যাচার থেকে বাঁচতে উর্দ্ধোতন কর্তৃপ¶ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অসহায় এই নারী।
দিপার স্বামী বাদল দাস বলেন, বাড়ি করার পর থেকে আমার স্ত্রী একা বাড়ি থাকায় তাকে নানাভাবে হয়রানি করত বিনয় দাস। বিনয়ের হাত থেকে বাঁচতে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। একাধিক বার ঢাকা থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে আসলে সে সমাধান করেননি। সর্বশেষ ইউপি চেয়ারম্যান রিপন দাস বলেছে আপনি আসলে বিষয়টি সমাধান হবে। আমি নির্ধারিত দিনে ঢাকা থেকে শালিসে উপস্থিত হই। সেখানে আমাদের সমস্যার সমাধান না করে, স্থানীয় ৩০/৩৫ জন লোকজনের সামনে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে অপমান করা হয়। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
বিনয় দাস বলেন, আমার নামে যেসব অভিযোগ দিয়েছে দিপা রায়, তা সব মিথ্যা। আমি এই ধরণের কোন কাজ করিনি।ইউপি চেয়ারম্যান রিপন দাস বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য আমি দুই পক্ষকে ডাকি। স্থানীয়দের উপস্থিতিতে সালিশী করা হলেও বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। আশা করি বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে। বাড়ি ছাড়ার বিষয়ের প্রকৃত কারন তিনি বলতে পারেন নাই।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত