বিঘা প্রতি ৭ হাজার টাকায় ধান কর্তন

আদমদীঘিতে ইরি-বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২২, ১৯:০৯ |  আপডেট  : ৬ মে ২০২৪, ২০:০০

বগুড়ার আদমদীঘিতে চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো ধান কাটামাড়াইয়ের কাজ বিলম্ব হলেও ঈদ পরবর্তী সময়ে কাটামাড়াইয়ের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। তবে এবার ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকরা বুক বেধেঁ থাকলেও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এলাকার বেশির ভাগ জমির পাকা ধান জমিতে শুয়ে পরে পানির সাথে একাকার হয়ে গেছে। ফলে শুয়ে পড়া ধানের গাছ উঠে গেছে জমিতেই। এসব কারণে ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। এছারাও ধানের দাম কম, শ্রমিক সংকট ও বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা দরে ধান কাটার কারণে প্রতি বিঘায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এলাকার কৃষকরা তাদের ফলানো ফসল নিয়ে দুঃচিন্তায় পরেছে। করোনার মহামারীতে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি কৃষক শ্রমিক সহ সব পেশার মানুষে কমবেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ। ফলে ক্ষতি পুশিয়ে নিতে কৃষকরা এবার মৌসুমের এই ইরি-বোরো ধানের দিকে তাকিয়ে থাকলেও গত কয়েক দিনের ঝড়ও বৃষ্টিতে তাদের আশার প্রদীপ নিভে গেছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এবার প্রায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষ করা হয়েছে। বৈইরী আবহাওয়া ও ঘন ঘন বৃষ্টিপাতে উপজেলায় চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো ধান সহ শত শত একর জমির ফসল নষ্ট হতে চলেছে। কষ্টার্জিত ফসল গুলো পানিতে শুয়ে পড়া ধানের গাছ গুলোর জমিতেই গাছ উঠে গেছে। এছাড়াও বাজারে বৃষ্টি ভেজা ও কাচাঁ ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকরা ধান বিক্রি করে লোকশানে পড়ছে। বর্তমানে প্রতি মন ধান প্রকার ভেদে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার কেশরতা গ্রামের কৃষক আখের আলী ও হেলাল উদ্দিন জানান, এবার আগাম লাগানো ধানের ভালো ফলন পাওয়ার আশা করেছিলাম কিন্তু ঝড় ও বৃষ্টিতে স¤পর্ণ ধান জমিতে শুয়ে পরায় ফলণ অনেক কম হচ্ছে। এছাড়াও ধানের দাম কম বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা ধান কাটার মজুরী হওয়ায় আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরেছি। এবার হয়তো যে পরিমান খরচ হয়েছে সেটা উঠানো যাবে না। 

উপজেলার করজবাড়ী গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন ও মহসিন আলী জানান, এবার আগাম লাগানো ধানের ফলন ভালো হলেও ঝড়ে পরে যাওয়া ও পানিতে ডোবা ধানের ফলন খুব কম হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কমে গেছে। 

কৃষকদের পানিতে ডোবা বা পড়ে যাওয়া কাচা ধান কাটার পর শ্রমিকের মজুরি পর্যন্ত উঠছেনা। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছে। এব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, চলতি মৌসুমে বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটের কারণে এবার ইরি-বোরো ধান কাটার মজুরী কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরোও জানান, এবার বৈরী আবহাওয়া তাই খুব দ্রুত জমি থেকে কৃষকদের কষ্টার্জিত ফসল গুলো ঘরে তোলার পরামর্শ প্রদান করেন। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত