অবশেষে ঢাকায় এল ফাইজারের টিকা
প্রকাশ: ১ জুন ২০২১, ০৯:৩৯ | আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০১
দেশে পৌঁছেছে ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা। সোমবার রাত ১১টা ২২ মিনিটের দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে-৫৮২ ফ্লাইটে এই টিকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। করোনার টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স থেকে বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে এই টিকা পেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্যসচিব শামসুল হক বলেন, বেলজিয়াম থেকে ১৮ বক্সে করে ফাইজারের এই টিকা দেশে এসেছে। বিমানবন্দর থেকে বিশেষ ফ্রিজার ভ্যানে করে নিয়ে এসব টিকা মহাখালীর ইপিআই স্টোরেজে রাখা হবে। শীততাপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের মাধ্যমে টিকা সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের এই টিকা মূলত ঢাকা শহরের মানুষকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নিবন্ধন করেছেন—এমন ব্যক্তিরা এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। তবে ফাইজারের টিকা কবে নাগাদ দেওয়া শুরু হবে, তা এখনো ঠিক করেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বর্তমানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া চলছে। পাশাপাশি চারটি হাসপাতালে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের টিকাও দেওয়া চলছে।
২৭ মে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এই টিকা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এই তাপমাত্রার সংরক্ষণপাত্র দেশে খুব কম আছে। ইপিআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচ), রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এই টিকা রাখার মতো উপযুক্ত পাত্র আছে। আপাতত এই টিকা আইপিএইচে রাখা হবে।
ভারত ও চীনের টিকাও দেওয়া হচ্ছে
গত ৭ ফেব্রুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের গণটিকাদান শুরু হয়। এই টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদন করা। গতকাল সারা দেশে ১৯ হাজার ৪৫৯ জনকে এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৪১ লাখ ৬১ হাজার ৭১৪ জনকে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মজুত শেষ হয়ে আসছে। এই টিকার প্রথম ডোজ পাওয়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া এখনো অনিশ্চিত হয়ে আছে।
এরই মধ্যে দেশে সিনোফার্মার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। চীন সরকার বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে। আরও ৬ লাখ উপহার দেবে। এ ছাড়া সরকার চীন থেকে দেড় কোটি টিকা কেনার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করেছে।
সিনোফার্মার টিকাটির বাণিজ্যিক নাম ‘ঝং আল কে উই’। গত ২৮ এপ্রিল টিকাটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের সুপারিশে বলা হয়েছিল, এক হাজার মানুষকে টিকা প্রয়োগ করে সাত দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। পর্যবেক্ষণে সন্তোষজনক ফল পাওয়া গেলে এই টিকা গণহারে দেওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে, ঢাকার চারটি হাসপাতালে চীনের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ২৫ মে দেশে চীনা টিকা দেওয়া শুরু হয়। গতকাল পর্যন্ত ২ হাজার ১৪২ জনকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত