শিক্ষাঙ্গনে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৫৩ | আপডেট : ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০২
১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলেছে দেশের সব স্কুল কলেজ মাদ্রাসা। দীর্ঘ ৫৪৪ দিন পর শিক্ষাঙ্গন আবার মুখরিত হয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কলরবে। মহামারী করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল সব স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা খুলেলেও বিশ্ববিদ্যালয় এখনও খোলেনি। আশা করা যাচ্ছে আগামি মাস নাগাদ যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ওগুলোও খোলা হবে।
করোনা সংক্রমণ ব্যক্তি এবং জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। শিল্প-বানিজ্যে যে ক্ষতি হয়েছে, তা সরকারি প্রণোদনার দ্বারা অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের কোনো প্রণোদনা আবিস্কার হয়নি। অটো প্রমোশনের ব্যবস্থা করে সেটা করা যেত, তবে তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই হতো বেশি। তারপরও এসএসসির রেজাল্টের ভিত্তিতে এইচ এস সির ফলাফল দিয়ে শিক্ষার্থীদের ইয়ার লস হয়তো এড়ানো গছে। তবে অধ্যয়ন ও পরীক্ষা ব্যতিরেকে এই ফলাফল কতটা বিবেচনাপ্রসূত হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
করোনাকালীন অনলাইন পাঠদানের যে পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল, তা দেশের সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছায় নি। এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করার সুবিধা বি ত ছিল। ফলে দেশের সচেতন নাগরিকগণ আরো আগেই স্কুল কালেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। টেলিভিশন টকশোগুলোতে আলোচকগণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে বারবার কথা বলেছেন। কেউ কেউ যে বিরোধিতা করেন নি তা নয়। তবে, তাদের যুক্তি কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়নি।
আমরা এক অদ্ভূত মানসিকতা পোষণ করি। এতদিন যারা স্কুল খোলার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন, তাদের কেউ কেউ এখন বলতে চাচ্ছেন আরো কিছুদিন অপেক্ষা করা দরকার ছিল। ঠিক এ মুহূর্তে স্কুল কলেজ খালা বিবেচনাপ্রসূত হয়নি। তারা বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। কেননা, আমরা এটা নিশ্চিত হয়েছি যে, করোনা ভাইরাস সহসা পৃথিবী ছেড়ে যাবে না। ফলে যতদিন করোনা সংক্রমণ থাকবে ততদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা কোনো যুক্তিতেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা তাই সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।
তবে, শিশুরা যাতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে না পড়ে সেদিকে শিক্ষক এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হতে হবে। বেসরকারি স্কুল সমূহের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে শিক্ষার্থীরা যাতে বিদ্যালয়ে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলে দিয়েছেন, যদি সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় বা শিক্ষার্থীরা সংক্রমিত হয়, তাহলে বিদ্যালয় পুনরায় বন্ধ করে দেয়া হবে। সুতরাং এ বিষয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত