ডুবে যাওয়া ট্রলারের তিন শিশু এখনও নিখোঁজ

মুন্সিগঞ্জে পিকনিকের ট্রলার ডুবি, সিরাজদিখানে নিহতদের বাড়িতে শোকের মাতম

  লতা মন্ডল

প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৩, ১৬:৫৬ |  আপডেট  : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৬

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে ডহরী-তালতলা গৌরগঞ্জ খালে পিকনিকের ট্রলার ও বাল্কহেডে সংঘর্ষে আট জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের আরো কয়েকজন নিখোঁজ ও ৩৫ জন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ডহুরী,রসকাঠি,তালতলা, শিলিমপুরসহ এর আশপাশের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এসব যাত্রীদেরকে উদ্ধার করে টংগীবাড়ি-লৌহজং ফায়ার সার্ভিস ও এলাকার লোকজন। তবে ডুবে যাওয়া ট্রলারের এখনও মাহি শেখ (৪), নাভা (৪) ও তুরান (৭) নামের তিন শিশু এখনও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিখোঁজের স্বজন পিকনিকের ডুবে যাওয়া ট্রলা্রে থাকা আলো আক্তার। নিখোঁজ এসব পরিবারের স্বজনদের মধ্যে এখন আহাজারি চলছে। 

আজ রবিবার (৬আগস্ট) সকাল ৯টায় খিদিরপুর গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয় মরদেহ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সিরাজদিখান উপজেলা থেকে ট্রলারে করে লোকজন পদ্মা সেতু ও এর আশপাশের এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। ট্রলারটিতে ৪৬ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। সারাদিন বেড়িয়ে ফেরার পথে বালুবাহী একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়। দুপুরে শিমুলিয়াঘাট থেকে ফিরতে গিয়ে রাত হয়ে যায়। বাল্কহেডের বাতি না থাকায় দেখা যাচ্ছিল না। যখন বাতি জ্বলে উঠে তখন ট্রলার আর দুর্ঘটনা এড়াতে পারেনি। অধিকাংশরা সাঁতরে উঠলেও পানিতে ডুবে মারা যান ৭ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন। 

এদিকে দুর্ঘটনার সাড়া ৫ ঘন্টা পর বিআইডবিউটিএ এর লিফটিং ব্যাগ ব্যবহার করে ডুবে যাওয়া ট্রলার উদ্ধারে রাত দেড়টা পর্যন্ত অভিযান করেছে। এখ‌নো অ‌ভিযান চল‌ছে। নিহতরা হলেন সিরাজদিখানের হ্যাপি আক্তার (৩০) ও তার দুই ছেলে সাকিব (৮) ও রাকিব (১২), বোন পপি আক্তার (৩৫), সাজিবুল (৪), ফারিহান (১০), মোকসেদা (৪২), মাহির (৫)। পুলিশ সুপার আসলাম খান বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। অধিকাংশই সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। ৩৪ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান ও লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আউয়ালসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা উদ্ধার কাজ তদারকি করছেন।

স্থানীয়রা জানান, যে জায়গায় ট্রলারটি ডুবেছে তার এক পাশে লৌহজংয়ের রসকাঠি গ্রাম আর অপরপ্রান্তে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সিলিমপুর গ্রাম। দুর্ঘটনার পর দুই পাড়ের মানুষ ছুটে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে ফয়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের লোকজন আসেন। কিন্তু রাতের অন্ধকার আর নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের উদ্ধার কাজ চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। বালুবাহী বাল্কহেড রেখে চালক পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটির ছাদে বাঁশ ও কাপড়া দিয়ে শামিয়ানা টানানো ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। দুর্ঘটনার পর পরই ট্রলারের যাত্রীদের স্বজনরা নদী পাড়ে চলে আসেন। সেখানে নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা আহাজারি করছেন। মরদেহ উদ্ধারের পর পরই প্রিয়জনের খোঁজে তারা সেখানে ছুটে যাচ্ছেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত