ভারত পুশইনের সময় নদীর পাড়ে ও জঙ্গলে ফেলে যায়—এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৫:২০ |  আপডেট  : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৫২

ভারত থেকে গত এক মাসে ১ হাজার ৫০০ বাংলাদেশিকে পুশইন করা হয়েছে। কিন্তু তারা পুশইনের সময় নদীর পাড়ে, জঙ্গলে ফেলে যায়—এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

শনিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাব-১১ সদর দপ্তর পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে গত এক মাসে ১ হাজার ৫০০ বাংলাদেশিকে পুশইন করা হয়েছে—এই তথ্য সঠিক। তবে বর্তমানে সংখ্যা কমে এসেছে।’

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘ভারতে যেসব বাংলাদেশি রয়েছেন, তাদের একসময় ফেরত নিতেই হবে—সে ১০ বছর পর হোক বা ২০ বছর পর। তবে ভারতের কিছু সীমান্ত দিয়ে আমাদের নাগরিকদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদেরও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের আমরা গ্রহণ করছি না, ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

তবে পুশইন নয়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ম মেনে নাগরিক পাঠাতে বলেছেন ভারতকে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতকে বলেছি—আমাদের কোনো নাগরিক থাকলে তারা যেন নিয়ম মেনে ফেরত পাঠায়। যেমনটা আমরা ভারতীয়দের নিয়ম মেনে ফেরত পাঠাই। কিন্তু তারা পুশইনের সময় নদীর পাড়ে, জঙ্গলে ফেলে যায়—এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে থাকলে তাদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করা হবে। তবে ভারত থেকে যদি কোনো রোহিঙ্গাকে পাঠানো হয়, তাকে গ্রহণ করা হবে না।’

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে এবং সেই প্রতিবাদের ফলেই বর্তমানে পুশইনের সংখ্যা কিছুটা কমেছে।’

গণঅভ্যুত্থানের সময় লুট হওয়া অস্ত্রসহ সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনের আগে এসব অবৈধ অস্ত্র দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকরা যদি সত্য তুলে ধরেন, বিভ্রান্তি দূর হবে। আমরা চাই নিরপেক্ষভাবে সব তথ্য আসুক। রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের জন্য মাঠে থাকবে, আর আমাদের দায়িত্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনেক মামলায় অগনিত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে আসামি করা হয়েছে। এজন্য মামলার তদন্ত কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানি না হয় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এ সময় অভ্যুত্থানের মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে মোহাম্মদপুরের আলোচিত ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কেউ যদি এই ঘটনাকে অবহেলা করে থাকে তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।

পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে র‌্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, র‌্যাব-১১ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ডিআইজি মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, উপ অধিনায়ক মেজর অনাবিল ইমাম, অপারেশন অফিসার সিনিয়র এএসপি গোলাম মোর্শেদসহ র‌্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

একই দিনে তিনি নারায়ণগঞ্জের পুলিশ লাইন, র‌্যাব-১১ কার্যালয় ও জালকুড়িতে বিজিবি-৬২ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ও পরিদর্শন করেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত