ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১৫:০১ |  আপডেট  : ১৬ জুন ২০২৫, ১৮:২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন মনির হোসেন (৩৫) নামের এক দিনমজুর। পারিবারিক তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া কথাকাটাকাটি শেষ পর্যন্ত রূপ নিয়েছে হত্যাকাণ্ডে।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়া গ্রামের নন্দ দিঘিরপাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে এবং পরে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত মনির হোসেন ছিলেন ওই এলাকার মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান রেখে গেছেন।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার স্ত্রী জুবায়দা বেগম ঘরের সামনে মাটির চুলায় রান্না করছিলেন। সেই চুলার ধোঁয়া মনিরের বসতঘরে প্রবেশ করলে তিনি আপত্তি জানান। এতে জুবায়দা ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্চস্বরে ঝগড়া শুরু করেন।

একপর্যায়ে মনিরের ভাতিজা শাওন মিয়া (১৫) এসে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর বাবুল মিয়া, তার আরেক ভাই সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম ও ছেলে ইমন একত্রিত হয়ে মনিরকে কাঠ, লাঠি ও ইট দিয়ে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় মনির মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে সন্ধ্যার পর তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, রাত ৭টার দিকে রোগীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ইসিজিতে কোনো হৃদস্পন্দন পাওয়া যায়নি।

নিহতের স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, “আমার স্বামী শুধু ধোঁয়ার কথা বলেছিল। এরপর পরিকল্পিতভাবে সবাই মিলে তাকে মেরে ফেলেছে। আগে থেকেই শাওন আমার স্বামীকে হুমকি দিত।”

প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, “চুলার ধোঁয়া নিয়ে তর্ক শুরু হলেও হামলা ছিল সম্পূর্ণ একতরফা। নিরীহ মনিরকে সবাই মিলে মেরে ফেলেছে।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) তানভির আহমদ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। মামলা করার কথা বাদীদের জানানো হয়েছে। হয়তো মরদেহ দাফনের পর আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।  

কা/আ 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত