ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বাগেরহাট জেলা জুড়ে বৃষ্টি, বিপাকে কৃষকরা
প্রকাশ: ৯ মে ২০২২, ১৯:৫৯ | আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫
বঙ্গোপসাগরের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বাগেরহাট জেলা জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সোমবার (৯ মে) সকাল থেকেই বাগেরহাটের সব উপজেলাতেই বৃষ্টি শুরু হয়। সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে বৃষ্টির পরিমানও। এই হঠাৎ এই বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন ধান চাষীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) সুপার সাইক্লোন হয়ে উপকূলে আঘাত হানার কথা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় অশনির। বাগেরহাটসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আাবহাওয়া অধিদপ্তর।
বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের ধান চাষী নাজমুল শেখ বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে অনেক বৃষ্টি ছিল। গত দুই তিন বৃষ্টি না থাকায় আমরা ধান কেটে মাঠে রেখেছিলাম। বাড়ি আনার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।
কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের শেখ রুস্তম আলী বলেন, আল্লাহর রহমতে ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলতে পেরেছি। কিন্তু কুটা (খড়) নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি। বৃষ্টির পানিতে কুটা নষ্ট হলে গরু-বাছুরকে কি খাওয়াবো।
শরনখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন উত্তর সাউথখালী এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, সিডরে আপনজন হারিয়েছি, ঘর-বাড়ি, জমি-জমা হারিয়েছি। সিডরের পরে আইলা, নার্গিস, বুলবুল, আম্পান, ইয়াসসহ একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মূল্যবান সম্পদও হারিয়েছি। এবছর নাকি আবার অশনি আঘাত হানবে। এত আঘাত সহ্য করার জায়গা নেই আমাদের।
মোংলা উপজেলার চিলা এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ শেখ বলেন, ঝড়ের পূর্বাভাস যখন থাকে তখন আকাশে মেঘ দেখলেই আমাদের নির্ঘুম রাত কাটে। সিডরে ঘর বাড়ি সব কিছু হারিয়েছি। এখন নদীর পাড়ে কোনোরকম ঘর বানিয়ে থাকি। নতুন করে আবার ঝড় আসছে। ঘর বাড়ি যদি আবার নদীতে চলে যায়, পরিবার নিয়ে গাছের নিচে থাকা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করীম বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনি’র ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিপিবি, রেড ক্রিসেন্ট, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সবাই প্রস্তুত আছে। বাগেরহাটে বর্তমানে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত চলমান রয়েছে। সংকেত বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, জেলার ৩৪৪ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিসের পাকা ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত