সাংবাদিক রোজিনা ও কতিপয় আমলার ঔদ্ধত্য
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১, ১১:৩১ | আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৫০
সচিবালয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টর রোজিনা ইসলামকে সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে পাঁচ ঘণ্টা আটক থাকতে হয়েছে। সেখানে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়, কেড়ে নেওয়া হয় তার মোবাইল। এরপর ‘গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট চুরির’ মামলায় তাকে সোপর্দ করা হয় থানায়। ঘটনাটি দেশব্যাপী ব্যাপক চা ল্যের সৃষ্টি করেছে। ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে সাংবাদিকসমাজ এবং সচেতন মানুষদের মনে। অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে এবং যখন আমরা মুক্ত সাংবাদিকতার কথা হরহামেশা শুনি, সেই সময়ে একজন কর্তব্যরত সাংবাদিকের ওপর সরকারি পদস্থ কর্মকর্তাদের এহেন চড়াও হওয়ার ঘটনা অচিন্তনীয় বটে। সেদিন অর্থাৎ ১৭ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সচিবের অফিসে রোজিনা ইসলামের সঙ্গে কী ঘটেছিল তা জানতে এখন আর কারো বাকি নেই। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রোজিনা তার অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য তথ্য খুঁজতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুননেসার রোষানলে পড়েন এবং সেখানেই একটি কক্ষে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। অতঃপর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদির ছবি তোলা এবং কিছু কাগজপত্র ‘চুরি’ করার অপরাধে (?) ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩’ এর ধারায় মামলা দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাজধানীর শাহবাগ থানায়। এ খবরে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় সাংবাদিকদের মধ্যে। তারা শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেন এবং রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। পরদিন থাানা থেকে তাকে আদালতে পাঠানো হয় এবং পুলিশ তার পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে। অপর পক্ষে রোজিনার অইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দেন এবং ২০ মে জামিনের শুনানির আদেশ দেন। কিন্তু ওইদিন শুনানি হলেও কোনো আদেশ দেননি আদালত। আজ রোববার আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সাংবাদিক রোজিনাকে নির্যাতনের খবরে দেশের সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। বিএফইউজে, ডিইউজেসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলো, জাতীয় প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নির্যাতনকারী কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীগণ রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেছেন। অপরদিকে গত ১৮ মে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে শিক্ষাবিদ ড, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তাকারীদের বিচার দাবি করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, রোজিনাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকার সত্য প্রকাশের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে এবং নিপীড়নমূলক বার্তা দিচ্ছে, তা দেশের সংবিধান ও স্বাধীনতার চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এ ঘটনায় দেশের স্বাধীন সাংবাদিকতা, মানবাধিকার এবং নাগরিকের মানবিক মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেন। একই দিনে লেখক-সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, নাট্যজন মামুনুর রশীদসহ ১১ জন বিশিষ্ট নাগরিক পৃথক বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গত ১৯ মে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশে একজন সাংবাদিককে গ্রেফতারের খবর তাদের নজরে এসেছে এবং এতে তারা উদ্বিগ্ন। অপরদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অবিলম্বে রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেফতারের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যে কর্মরত সংবাদকর্মীগণ মানববন্ধন করেছে গত ১৯ মে।
এদিকে ঘটনার পরদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, তিনি শুনেছেন রোজিনা স্বাস্থ্য সচিবের পিএসের কক্ষে তার অনুপস্থিতিতে ঢুকে টেবিলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের ছবি তুলছিলেন। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে পুলিশ এসে রোজিনাকে আটক করে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, রোজিনা এমন গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়েছিলেন যে, যেগুলো প্রকাশ হলে চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা না পাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সচিবালয়ে রোজিনাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি বলেও দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অনেকেই মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের শেখানো কথাগুলোই সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন। ১৯ মে পত্রিকায় প্রকাশিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের সারমর্ম মন্ত্রী মহোদয়ের বক্তব্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ঘটনায় ‘দায়িত্বশীল’ একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এমন সাফাই সাক্ষ্য কারো কাছেই অভিপ্রেত মনে হয়নি। অপরদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এম এ মোমেন বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনার সাথে যা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। একই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার কর্মকান্ডে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বদনাম শুনতে হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। কেননা, দুর্নীতি-অনিয়মে আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যেই বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জনকরেছে।
প্রশ্ন উঠেছে এমন কোন্ গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়েছিলেন বা সরানোর চেষ্টা করেছিলেন রোজিনা, যা প্রকাশ হলে বাংলাদেশ চীন ও রাশিয়ার টিকা প্রাপ্তি থেকে বি ত হতো? নথিপত্রগুলো যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে সেগুলো একটি টেবিলে উন্মুক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল কেন? আর অমন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নথি টেবিলে রেখে পিএস মহোদয় কোথায় হাওয়া খেতে গিয়েছিলেন? কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ওইসব কাগজপত্রে এমন কোনো তথ্য রয়েছে কিনা যা জনসমক্ষে প্রকাশ হলে থলের বেড়ালটি ঝপ করে বেরিয়ে পড়ত? যারা এ সন্দেহ করছেন তাদেরকে দোষ দেওয়া যাবে না। কেননা, আমরা বাংলাদেশের মানুষদের অবস্থা এখন ঘরপোড়া গরুর মতো। আকাশে সিঁদুরে মেঘ দেখলেই অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কেনাকাটয় ইতোপূর্বে যেসব লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে তাতে মনের মধ্যে নানা রকম সন্দেহ উঁকি মারে। সাড়ে সাইত্রিশ লাখ টাকার পর্দা, সাড়ে বারো লাখ টাকার ডেন্টাল চেয়ার তো কাজী জেবুননেসার মতো কর্মকর্তারাই কিনেছেন। জনগণের অর্থ লোপাটের এই উদাহরণ স্মরণে থাকলে সন্দেহ না করে কি উপায় আছে?
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম জামিন পেলেন কি পেলেন না তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একজন পেশাদার সাংবাদিকের সঙ্গে সরকারি পদস্থ কর্মকর্তাদের আচরণ। একজন সাংবাদিক তার প্রতিবেদন রচনার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এটা তার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আর তা যদি হয় দুর্নীতি সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, তাহলে ডকুমেন্ট সংগ্রহ হয়ে পড়ে অত্যাবশ্যকীয়। আর সে তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি একজন সাংবাদিকের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। রোজিনা সেই তথ্য সংগ্রহ করতেই গিয়েছিলেন সেখানে। এমনতো নয় যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজকর্মের সঙ্গে দেশের প্রতিরক্ষার বিষয়টি জড়িত। তাহলে কেন এই গোপনীয়তা, কেন এই ঢাক গুড়গুড় আচরণ?
পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী এটা অনুমান করা যায় যে, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ওপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বেজায় নাখোশ ছিলেন। তাকে ফাঁদে ফেলে ‘শায়েস্তা’ করার মওকা তৈরিতে তারা অনেক মাথা খাটিয়েছেন। অনেকে মনে করেন, স্বাস্থ্য সচিবের পিএসের টেবিলে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল খোলা অবস্থায় ফেলে রেখে রোাজিনার জন্য ফাঁদ তৈরি করা হয়েছিল। কেননা, তারা জানতেন রোজিনা এসে অমন ফাইল দেখলেই তা থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে চাইবেন। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, সেদিন সচিবালয়ে থেকে বেরিয়ে যাবার মুহূর্তে কোনো একটি ফোনকল পেয়ে রোজিনা স্বাস্থ্য সচিবের অফিসে যান। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ফোনকলে তাকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। এটা অবশ্য সন্দেহপ্রবণ মানুষদের ধারণা। সত্যাসত্য রোজিনা নিজেই বলতে পারবেন। তাছাড়া সচিবালয়ে থেকে বের হওয়ার সময় কে তাকে ফোন করেছিল, তা কল লিষ্ট দেখে বের করা কঠিন কোনো বিষয় নয়।
এখন প্রশ্ন হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কেন রোজিনা ইসলামের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। যারা সংবাদপত্র পড়েন তাদের কাছে বিষয়টি অস্পষ্ট থাকার কথা নয়। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগে সাম্প্রতিককালে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে, রোজিনা ইসলামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সেসব গোমর ফাঁস হয়েছে। কেনাকাটা থেকে নিয়োগ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তার প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছে। নিজেদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ায় কর্মকর্তারা যে রোজিনাকে টার্গেট করবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে কারণে তাকে হেনস্তা করার একটি পরিবেশ কৌশলে সৃষ্টি করা হয়ে থাকতে পারে। সঠিক তদন্ত হলে আসল রহস্য বের হবে সন্দেহ নেই।
এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তাহলো, কতিপয় সরকারি আমলার ‘কুচ পরোয়া নেহি’ মনোভাব এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ। রোজিনার বেলায় যেটা ঘটেছে তা ওই মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, আমলারা যা খুশি করবেন, তাদেরকে কিছু বলা যাবে না। বিভিন্ন ঘটনায় আমরা তাদের এই রাজাধিরাজ মানসিকতার প্রমাণ পেয়েছি। না আমি এটা বলতে চাই না যে, সব সরকারি কর্মকর্তা খারাপ। তবে আমাদের আমলাতন্ত্রের ভেতরে অনেক ‘কালো বেড়াল’ রয়েছে, যাদের কারণে গোটা প্রশাসন প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে।
একটি বিষয় অনেকেই উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছেন যে, কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা নিজেদেরকে সর্বেসর্বা মনে করছেন। তারা মনে করনে তাদের কাজের কোনো জবাবদিহির বালাই নেই। কেউ কেউ নিজেদেরকে জনগণ থেকে আলাদা শ্রেণি বলেও ভেবে থাকেন। তারা এটা ভুলে যান যে, তারা জনগণের প্রভূ নন, সেবক। ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ শব্দািটর সরল বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘জনগণের চাকর’। আমরা ভদ্রতা বশত তাদেরকে সেবক বলি। কিন্তু জনগণকে তারা কী ধরনের সেবা দিয়ে থাকেন তার উদাহরণ মাঝেমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর এজন্যই গণমাধ্যম আজ সরকারি কর্মকর্তাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে। এই সংবাদমাধ্যম নামের ‘আপদ’ না থাকলে তারা আপন রাজত্বে রাজা হয়ে থাকতে পারতেন!
রোজিনার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তথ্যমন্ত্রী,আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন, স্মারকলিপি দিয়েছেন। মন্ত্রীগণ আশ্বস্ত করেছেন রোজিনা ন্যায় বিচার পাবেন বলে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন- রোজিনা ন্যায় বিচার পাবার পাশাপাশি তাকে যারা লাঞ্ছিত করল, তাদের কোনো বিচার হবে কি না। যেখানে খোদ সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, অবাধ তথ্যপ্রবাহকে গুরুত্ব দিচ্ছে, মানুষের তথ্য জানার অধিকারও যেখানে স্বীকৃত, সেখানে কোনো পাবলিক সার্ভন্ট সরকারের নীতিবিরুদ্ধ কাজ করেও বহাল তবিয়তে থাকবে- এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়।
আমাদের আমলাতন্ত্র তথা প্রশাসনের মধ্যে দুর্নীতি-অবক্ষয়ের ভয়াবহ পচন শুরু হয়েছে। এ পচন রোধ করতে না পারলে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে। সে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়র আগেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের লাগাম টেনে ধরা অতীব জরুরি।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত