আদমদীঘিতে উৎপাদন হবে সাড়ে ৩১ লাখ কেজি ভোজ্য তেল
সরিষার বাম্পার ফলন
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৫৩ | আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৩
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাড়াই শেষে উৎপাদিত হবে প্রায় সাড়ে ৩১ লাখ কেজি ভোজ্য তেল ও সাড়ে ৫২ লাখ কেজি পশু ও মাছের খাদ্য খইল। জানা গেছে, ৫/৬ বছর আগেও আদমদীঘি উপজেলায় পাঁচ হাজার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ হতো না। কিন্তু মহামারী করোনা এবং রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে আমদানী নির্ভর ভোজ্য তেল সয়াবিন ও পামওয়েলের মূল্য। এঅবস্থায় নড়েচড়ে বসে সরকার ও কৃষক। সরকার ভোজ্য তেল জাতীয় ফসল সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করে কৃষকদের। প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের দেওয়া শুরু করে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও প্রয়োজনীয় সার। বাড়তে থাকে তেল জাতীয় ফসল সরিষার আবাদ।
এভাবে বাড়তে বাড়তে চলতি বছর আদমদীঘিতে ৩০ হাজার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। উপজেলা কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা জানান, হলুদ ও কালো জাতের সরিষার প্রতি বিঘায় গড়ে প্রায় ৭ মন হারে ফলন হচ্ছে। সে হিসাবে ৩০ হাজার বিঘা জমিতে মিলবে প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার মন সরিষা। উপজেলার কোমারপুর গ্রামের কৃষক আজম হোসেন বলেন, আমন ধান কাটার পর বোরো চাষাবাদের আগে অধিকাংশ জমি অনাবাদি রাখা হত। কিন্তু গত ২/৩ বছর ধরে তিনিসহ উপজেলার কৃষকরা জমি অনাবাদি না রেখে সরিষার আবাদ করছেন। এতে বেশ লাভবান হওয়া যাচ্ছে। সরিষা চাষের খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় লাভ হচ্ছে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা। সেই সাথে পরিবারের প্রয়োজনীয় ভোজ্য তেল কেনার টাকাও সাশ্রয় হচ্ছে। মিলছে গরুর খাদ্য খইল। প্রতি কেজি খইল কিনতে হয় ৫০ টাকা কেজি দরে। সেটিও একটি বড় সাশ্রয়। এবছর আমি ৪০ বিঘা জমিতে সরিয়া আবাদ করেছি। আশা করছি সব জমির সরিষা তোলা ও মাড়াইয়ের পর পাওয়া প্রায় ২৮০ মন সরিষা বিক্রি করে ভাল মুনাফা পাব।
ডালম্বা গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার বারী-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। কমপক্ষে ৬/৭ মন সরিষা পাব। বাড়তি ফসল হিসাবে লাভ হবে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বাণিজ্যিক ভাবে তেল উৎপাদনকারী তেলকল মালিকরা জানান, প্রতি মন হলুদ ও কালো সরিষা থেকে তেল মেলে গড়ে ১৫ কেজি। সে হিসাবে ওই পরিমান সরিষা থেকে মিলবে প্রায় সাড়ে ৩১ লাখ কেজি সরিষার তেল। খইল হবে প্রায় সাড়ে ৫২ লাখ কেজি। আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট ও মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারনে সরকার ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। একারণে অন্যান্য ফসলের মত ভোজ্য তেল জাতীয় ফসল সরিষা চাষে প্রণোদনা দিতে শুরু করেছেন। যার সুফল মিলতে শুরু করেছে। এধারা অব্যহত রাখা গেলে ভোজ্য তেলের আমদানী অনেকাংশে কমে যাবে, হওয়া যাবে ভোজ্য তেল উৎপাদনে সাবলম্বিতা। এবছর আদমদীঘি উপজেলায় তিন হাজার কৃষককে তিন হাজার কেজি সরিষা বীজ এবং ৬০ হাজার কেজি নন-ইউরিয়া সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত