দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ এএসআই
শ্রীপুরে অভিযোক্তকে টর্চারের অভিযোগে এএসআই’র ওপর হামলা
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫১ | আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৯
জমি বিক্রির বায়নার টাকা উদ্ধারের সালিশ বৈঠকে প্রকাশ্যে একজনকে মারধোরের অভিযোগ উঠেছে শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহীনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের হামলায় ওই পুলিশ সদস্য আহত অবস্থায় দুই ঘন্ট অবরুদ্ধ ছিলেন। দুই ঘন্টা পর থানা থেকে অন্যান্ন পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করেন এএসআ কে শালীস বৈঠকে মারধোরের ঘটনায় স্থানীয়রা ওই পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুরে উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের মারধোরের শিকার লাইছুদ্দিন ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের রমজান আলী মুন্সি আনুমাণিক সাত মাস আগে পাশর্^বর্তী কাপাসিয়া উপজেলার জনৈক নারী মাহমুদার কাছে সাড়ে ৩ গন্ডা জমি বিক্রি করেন। ওই নারী জমি ক্রয় করার উদ্দেশে রমজান আলীকে ৫ লাখ টাকা বায়না করেন। ওই নারী জমির কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই করার পর জানতে পারেন বায়নাকৃত সাড়ে ৩ গন্ডা জমি বনের জায়গা হিসেবে চিহ্নিত।
পরে ওই নারী জমির মালিক রমজান আলী মুন্সির কাছে জমির টাকা ফেরত চান। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে রমজান আলী মুন্সি দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করতে থাকে। পরে ভুক্তভোগী নারী শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনা নিষ্পত্তির জন্য থানা থেকে কয়েকবার সালিশ বৈঠকে বসার কথা জানালে রমজান আলী মুন্সি সেখানেও কালক্ষেপন করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে রমজান আলী মুন্সীর বাড়িতে সালিশ বৈঠকে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহীনের উপস্থিতিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য রমজান আলী মুন্সীর বাড়িতে বসেন। বৈঠকে কথাবার্তার এক পর্যায়ে রমজান আলী মুন্সির ভাতিজা লাইছুদ্দিনকে উপস্থিত সকলের সামনে এএসআই শাহীন মারধোর শুরু করেন। পরে উপস্থিত লোকজন এএসআই শাহীনকে অবরুদ্ধ করে তার ওপর হামলা করেন। উভয়কেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের হামলার শিকার লাইছুদ্দিন জানান, মীমাংসায় আলোচনার মাধ্যমে সকল ফয়সালা শেষ হওয়ার পর আমি শুধু বলেছি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে স্বাক্ষর নিয়ে টাকা পয়সা পরিশোধ করা হবে যেন পরবর্তীতে অস্বীকার করতে না পারে। এ কথা বলা মাত্রই এএসআই শাহীন উপস্থিত সকলের সামনে আমাকে এলোপাতারী মারধোর শুরু করেন।
রমজান আলী মুন্সি জানান, এটি বন বিভাগ বা গেজেটভুক্ত কোনো জমি নয়। ওই নারী জমি কেনার বায়না দিয়ে জমি নিতে পারবে না বলে জানায়। পরে তার বায়নাকৃত টাকা ফেরত চাইলে আমি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য রাজি হই। এ নিয়ে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বৈঠকটি আমার বাড়িতে বসে। আলাচনার শেষ পর্যায়ে টাকা দিতে দেরি হওয়ায় দারোগা উত্তেজিত হয়ে আমার ভাতিজাকে সকলের সামনে মারধোর শুরু করেন।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে এএসআই শাহীন জমি সংক্রান্ত সালিশ বৈঠকে গিয়েছিল। সেখানে বিবাদী পক্ষের লোকজন তার ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে থানা থেকে ফোর্স গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে এএসআই শাহীন কাউকে মারধোর করেছে কিনা এব্যাপারে জানা নেই।
গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মাদবর জানান, ফরিদপুর গ্রামে গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। এসে জানতে পারলাম এক নারী জমি কিনছে। পরে আর টাকা দিতে পারবে না বলে বায়নার টাকা ফেরত চায়। পরে থানার এক দারোগা বিষয়টি মীমাংসার জন্য বসলে বৈঠকে টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় দারোগা উত্তেজিত হয়ে লাইছুদ্দিনকে চরথাপ্পর দেয়। এ ঘটনার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আগামীকাল শনিবার (২৩ এপ্রিল) আমরা শ্রীপুর থানার ওসি’র ওখানে বসবো। স্থানীয়দের হামলার শিকার এএসআই শাহীনের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত