শেখ হাসিনার প্রশংসায় ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২২, ১২:৪৭ |  আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১

কানাডায় নিযুক্ত হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান পোর্ট অব স্পেনে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান পলা মে উইকসের কাছে সেদেশে বাংলাদেশের অনাবাসিক হাইকমিশনার হিসেবে তার পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) অটোয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন এ তথ্য জানায়।

একইদিনে পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রাক্কালে হাইকমিশনার সেদেশের  পররাষ্ট্র ও কারিকম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. আমেরি ব্রাউনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন এবং পরিচয়পত্রের অনুলিপি হস্তান্তর করেন। এছাড়া তিনি একই মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিবের সঙ্গেও দেখা করেন। পরে তিনি সস্ত্রীক সেদেশের রাষ্ট্রাচার প্রধানের সঙ্গে সুসজ্জিত অশ্বরোহী নিরাপত্তা বাহিনী পরিবেষ্টিত বিশেষ মটর শোভাযাত্রাসহ পররাষ্ট্র ও কারিকম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পৌঁছান।

তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে যথা নিয়মে তার পরিচয়পত্র দেন। সেখানে হাইকমিশনারকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

পরিচয়পত্র দেওয়া শেষে হাইকমিশনার ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মিলিত হন। নিয়মিত শুভেচ্ছা বিনিময়ের শেষে রাষ্ট্রপতি ২০০৯ সালে কমনওয়েলথ সম্মেলন উপলক্ষে সেদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি সফরের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রসংশা করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং তার সময়কালে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।  

তিনি আলোচনাকালে দুদেশের মধ্যকার বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে দুদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার নিয়মিত পরামর্শ সভা বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পররাষ্ট্র ও কারিকম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পোর্ট অব স্পেনে তার পরবর্তী সফরের সময় অথবা ভার্চ্যুয়ালি এ স্মারকটি চূড়ান্ত হতে পারে। হাইকমিশনার বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান।

হাইকমিশনার ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতিকে অদূর ভবিষ্যতে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতি তা সাদরে গ্রহণ করেন এবং জানান যে অদূর ভবিষ্যতে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে এ সফরের আয়োজন করা যেতে পারে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে আরও উল্লেখ করেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতার সঙ্গে দেখা করতে পারলে তিনি খুব খুশি হবেন। হাইকমিশনার ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে এক নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন।  

পরিচয়পত্র দেওয়া শেষে হাইকমিশনার ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী প্রতিনিধি সিনেটর পাওলা গোপী-স্কনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দুদেশের মধ্যে ব্যবসা ও বাণিজ্য শক্তিশালীকরণ বিষয়ে আলোচনা করেন। বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী  বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব পণ্য ও ঔষধ পণ্য আমদানির বিষয় উল্লেখ করেন। দুদেশ একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের ওপর সম্মত হন। তিনি বাংলাদেশ থেকে একটি খসড়া সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) খসড়ার জন্য অনুরোধ করেন। বাংলাদেশ হাইকমিশন একটি খসড়া সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) তৈরি করছে, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।  

হাইকমিশনার তাছাড়াও ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধি এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর কিছু আমদানিকারকের সঙ্গে বিশেষ করে যারা বাংলাদেশ থেকে আরএমজি এবং চামড়া ও ঔষধজাত পণ্য আমদানি করছে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং কীভাবে তা সহজ করা যায় হাইকমিশনারকে তা খতিয়ে দেখার কথা বলেন।

আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যমান সমস্যা দূর হলে বর্তমানের দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আমদানি থেকে পরবর্তী দুই বছরে চার মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হতে পারে।

হাইকমিশনার ত্রিনিদাদ ও টোবাগো বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি বিশেষ করে রাজধানী পোর্ট অব স্পেনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মিলিত হন এবং তাদের কথা শোনেন কীভাবে তাদের কন্স্যুলার সেবা সহজভাবে দেওয়া করা যায় সে বিষয়ে কথা বলেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত