শিবগঞ্জে আখ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

  রশিদুর রহমান রানা শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ  

প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:০৮ |  আপডেট  : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫০

বগুড়ার শিবগঞ্জের হাটবাজার ও বিভিন্ন বন্দরে ভাসমান দোকানে মৌসুমি ফসল  আখ বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। আর আখ কিনতে ভিড় করছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে আখের পসরা সাজিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মৌসুমি ব্যবসা। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি বাগড়া দিলেও বেচাকেনা ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার শিবগঞ্জ হাট,  বুড়িগঞ্জ বন্দর, আমতলী বন্দর, মহাস্থান বন্দর, গাংনগর বন্দর, সিহালী হাট, বুড়িগঞ্জ বন্দর, শিবগঞ্জ থানা বাজার, জগন্নাথপুর বাজার, দেউলী বাজার, মোকামতলা বন্দর, মাঝিহট্ট বন্দর, দাড়িদহ বাজারসহ প্রায় ৪০-৪৫টি পয়েন্টে ভাসমান আখের দোকান বসিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসায়ীরা চালাচ্ছে তাদের ব্যবসা। গড়ে প্রতিদিন শিবগঞ্জে ৫হাজার পিচ আখ বিক্রি হয় ৬০-৭০ হাজার টাকার।

কথা হয় আমতলী বন্দরের মৌসুমি আখ বিক্রেতা আলাদীপুর গ্রামের আব্দুল মোমিনের সাথে। সে জানায়, উপজেলার মহাস্থান বন্দরের আখের আড়ৎ থেকে প্রতিদিন ৪বোঝা (১০০টি) গ্যান্ডারী জাতের আখ ১হাজার থেকে ১৫'শ টাকায় কিনে আনে। সন্ধার পূর্বেই সব আখ ১০-২০টাকা দরে বিক্রি হয়ে যায়। ৪বোঝা আখ বিক্রি করে দিনে তার গড়ে ৫'শ থেকে ৮'টাকা লাভ হয়।

শিবগঞ্জহাটের ভাসমান আখ বিক্রেতা অর্জুনপুর গ্রামের দুলু বলেন, প্রতিদিন বিএসআরআই-৪২ রংবিলাস (চুষে খাওয়ার জাত), মধুমালা, রনাঙ্গণ, বনপাড়া গ্যান্ডারি জাতের আখ গড়ে প্রতিদিন ২'শ টি বিক্রি করি।  দিনে ১হাজার থেকে ১৮'শ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। এ বিক্রি চলবে প্রায় আড়াই মাস।

আখ কিনতে আসা উপজেলার চাঁদনিয়া গ্রামের রফিক শেখ বলেন, একসময় আমাদের উপজেলায় আখের সুদিন ছিলে। এখন আর দিগন্ত মাঠ জুড়ে আখ চাষ হয়না। তাই  বাহিরের অঞ্চল থেকে আখ কিনে এনে ব্যবসায়ীরা খুচরা বিক্রি করছে। তাই দামও একটু বেশি নিচ্ছে।

উপজেলার গাংনগর এলাকার আখ চাষী মাশকুরুল ইসলাম বলেন, ৩বছর আগে ১০ বিঘা জমিতে আখ চাষ করতাম। তখন আখের ভালো দাম ছিলো। বর্তমানে আখের চেয়ে অন্য ফসল চাষে লাভ বেশি হওয়ায় আর আখ চাষ করিনা। এ অঞ্চলের আখ তেমন মোটা ও মিষ্টি হয়না। 

মহাস্থান বন্দরের মুক্তি ফল ভান্ডারের আড়তদার রাহেদুল ইসলাম দৈনিক জয়যুগান্তরকে বলেন, আমাদের এলাকার আখের চেয়ে বাহিরের আখের মিষ্টি ও স্বাদ বেশি। আমার আড়তে রংপুরের পাগলাপীর, বড়ভিটা, চন্দনপুরহাট ও দিনাজপুর থেকে গড়ে প্রতি শত ৫'শ থেকে ১২'শ টাকা কিনে পাইকারি বিক্রি করি।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকতা আল মুজাহিদ সরকার বলেন, আমরা কৃষকে বিভিন্ন সময় আখ চাষে ব্লক সুপারভাইজারের মধ্যমে উদ্ভুদ্ধ করে থাকি। উপজেলার সৈয়দপুর, দেউলী ও রায়নগর ইউনিয়নে আখের চাষ হয়ে থাকে। কৃষকদের অনিহার কারণে বহিঃঅঞ্চলের আখ আমদানী করে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে। কৃষকদের সদিচ্ছা থাকলে আবারও আখকে বানিজ্যিক ভাবে আখ চাষ করা সম্ভব। তিনি বলেন, আখের রস মিষ্টি হলেও শরীরের ওজন বাড়ে না বরং কমে। এছাড়া আখের রস খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত