শাপলা মার্কা পেতে আমরা প্রয়োজনে আদালতে যাবো: পঞ্চগড়ে সারজিস

  মোঃ কামরুল ইসলাম কামু পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৩ |  আপডেট  : ১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৮

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আইনগতভাবে এনসিপি শাপলা প্রতীক পায়। তবে তা আদায়ে যদি রাজপথ বা আদালতে যেতে হয় আমরা যাবো। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের হুদুপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন। 

তিনি বলেন, প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস তার জায়গা থেকে বলেছেন বিদেশী কিছু শক্তি তাদের জায়গা থেকে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। এই জায়গায় এনসিপি বা অন্য কোন দলের কথা যদি বলেন আমরা বরং চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন হোক কিন্তু আমরা আমাদের জায়গা থেকে সব সময় যেটা বলেছি সেটা হচ্ছে একটা বিচার এবং সংস্কারের প্রক্রিয়া মধ্য দিয়ে গিয়ে একটা সুস্থ নির্বাচন হোক। এটা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য খুবই জরুরী।

সারজিস বলেন, এটা আমাদের জায়গা থেকে এখন মনে হয় দেখেন আমাদের শাপলা পাওয়ার সাথে নির্বাচন পিছানোর আগানোর সাথে কোন সম্পর্ক নাই আমরা যেহেতু আইনগতভাবে শাপলা টা পাই। আইনগত কোন বাধা নেই। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন তার ওই মেরুদন্ড শো করবে যে বাইরের কোন চাপ বাধাঁতে তারা চাপের পৃষ্ঠা না হয়ে আমাদের যে শাপলা মার্কাটা যেটা আমরা আইনগতভাবে পাই এনসিপি সেটা আমাদেরকে দিয়ে দিক। এটা আমাদের একটা প্রত্যাশা থাকবে এটার লড়াইটা আলাদা। এটা আমার আমাদের মত করে আইনগতভাবে যদি যাওয়া লাগে, রাজপথে যাওয়া লাগে আমরা সেভাবে যাব। এটার সাথেই নির্বাচন আগানো পিছানোর কোন সম্পর্ক নাই।

সারজিস আরো বলেন, আমরা মনে করি যারা নির্বাচন পিছানোর একটা কালো উদ্দেশ্য আছে এবং এই চক্রান্তের সাথে জড়িত যারা চাই যে দেশ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে। দেশকে কিছুটা অস্থিশীল করতে ওই মানুষগুলো নিজেদের যে চক্রান্তটা অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য এখন এই ধরনের কথা বলছে যে উনারা যদি মার্কা না পায় তখন উনারা যে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবে এটা মনে হয় নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত। আমরা স্পষ্ট করে বলি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি মনে করে তারা ফেব্রুয়ারির প্রথমে নির্বাচন দিবে এনসিপির সেই জায়গায় কোন আপত্তি থাকবে না। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা একটা দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। জুলাই সনদের আমরা আইনগত ওই ভিত্তিটা চাই যেটার মধ্য দিয়ে আমাদের মৌলিক সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন হবে।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের এনসিপির পক্ষ থেকে ছোট্ট উপহার তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ তাদের অবস্থাটা জানার চেষ্টা করছি। মন্দিরের অবস্থা তাদের যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা এগুলো আমরা জানার চেষ্টা করছি এবং সেগুলো এবং সে অনুযায়ী নোট করছি। আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির পক্ষ থেকে তাদেরকে এটা কমিটমেন্ট করেছি যে আমরা বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে যেটা দেখেছি। অভূর্থান পরবর্তী সময়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী যারা ভাই বোনরা রয়েছেন তাদের মন্দির কিংবা শ্মশান কিংবা যেখানে প্রতিমা বিসর্জন হয় এই রিলেটেড যে খাস জমিগুলো আছে ওই জমিগুলো অভ্যুত্থানের আগে তো অনেক হয়েছে অভ্যুত্থানের পরেও কিছু কিছু লোক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেগুলো দখল করার চেষ্টা করছে ভুয়া জাল দলিল দিয়ে। আমরা সরকারের কাছে আমাদের এনসিপির পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি এরকম একটি কমিশন গঠনের জন্য আমরা আবেদন জানাবো যেখান থেকে এই বিষয়গুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে যেগুলো খাস জমি এরকম ধর্মীয় এবং এই ধর্ম রিলেটেড কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল সেগুলোর যেন ওই নিরাপত্তাটা নিশ্চয়তা করা হয়।  

তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী সময়ে ওই আওয়ামী লীগ শুধু নামকাওয়াস্তে যখন দরকার ছিল তখন আমাদের সনাতন ধর্মের ভাইদের কাছে এসেছে কিন্তু আপনারা দেখে থাকবেন বাংলাদেশের অনেক বড় বড় মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে লোক দেখানো একটা কমিটি হয়েছিল তখন লোক দেখানো দুই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিন্তু তখন আমরা না দেখেছি কোন দৃশ্যমান শাস্তি না দেখেছি কঠিন কোন বিচার। এই কারণে কিন্তু অনেক ষড়যন্ত্রকারী চক্রান্তকারী ওই টুলটাকে বারবার ব্যবহার করেছে এবং ধর্মীয় যে আমাদের সম্প্রীতির পরিবেশ ওই জায়গায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির পক্ষ থেকে আমাদের সরকারের পাশে স্পষ্ট আহ্বান থাকবে এরকম কোন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যদি বাংলাদেশে ঘটে থাকে আপনারা দৃশ্যমান সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত পঞ্চগড়ের আমরা পনেরোটা দুর্গা মন্দিরে গেছি। প্রত্যেক জায়গায় আমরা বিজিবি, পুলিশ, র‌্যার, আনসার বাহিনী যারা আছে তাদের বিভিন্ন ধরনের তাদের উপস্থিতি আমরা ভালোভাবে দেখেছি এবং নিরাপত্তা আমাদের কাছে সন্তোষজনক ছিল। 

সারজিস বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা দেখলাম যে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে যে প্রতিমা রয়েছে সেখানে বিভিন্ন ধরনের এআই টুল ব্যবহার করে আকৃতিতে বিকৃতি এনে বিভিন্ন প্রপাগা-া ছড়ানো হচ্ছে। পড়ে যখন বাস্তবে আসে মন্দিরে জেলা প্রশাসক বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টিম যখন আসে দেখেন এরকম কিছু হয়নি। ভারতীয় একটা মিডিয়া প্রোপাগান্ডা সেল আছে এগুলোকে মিডিয়া বলা যায় না, ওইটার নামই প্রোপাগান্ডা হাউস। তারা তাদের জায়গা থেকে ন্যূনতম পেশাদারিত্বের পরিচয় না দিয়ে এরকম কালো টাকার ইনভেস্টমেন্ট গুলো তাদের উপর ওইখানে যায়। ওই কালো টাকাগুলোকে ব্যবহার করে এরকম ভারতীয় কিছু হাউস প্রপাগান্ডা ছড়ায় তারা দেখাতে চায় যে আমাদের ভিতর যে ধর্মীয় সম্প্রীতি এটা মনে হয় আমাদের নাই এখন আমাদের ভিতরে মনে হয় প্রচুর হানাহানি চলছে। আপনারা আমাদের এখানে বাবা মা ভাই চাচিদের বয়সে অনেক আছেন তাদের সাথে কথা বলবেন আমি অন্তত দেখেছি আমাদের এই এলাকার শান্তিপূর্ণ সম্প্রীতির একটা পরিবেশ সবসময় থাকে। তারা দেখবেন একই হোটেলে বসে খাওয়াকরে। একই যানবাহনে চলাচল করে বাসায় অনুষ্ঠান হলে একে অপরকে দাওয়াত দেয় এইটুকু সম্প্রীতি আছে আমরা চাই এই পারস্পারিক সম্পর্ক সবসময় থাকুক।

মন্দির পরিদর্শনকালে সারজিস মন্দির কমিটির হাতে এনসিপির পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এসময় সদর উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী তানবিরুর বারী নয়ন, জেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার আবু কায়েস বাবু সহ এনসিপির ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত