উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ৩১৮৪০ মেঃ টন চাল

রংপুরের শষ্য ভান্ডার কাউনিয়ায় শ্রমিক সংকটে চরম বিপাকে কৃষক

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২২, ১৯:১৬ |  আপডেট  : ৭ মে ২০২৪, ১৮:২৭

রংপুরের শষ্য ভান্ডার নামে খ্যাত কাউনিয়ায় একটি পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নে মাঠে মাঠে সোনালী ধান দোল খাচ্ছে। ইতোমধ্যে ধান কাটামারাই শুরু হয়েছে। বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। কিন্তু শ্রমিক সংকটে ধানা কাটা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কাউনিয়ার কৃষক। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন প্রাম ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টি ও শ্রমিক সংকটের মধ্যেই মাঠে মাঠে ধান কাটা শুরু হয়েছে। শ্রমিক সংকটে পাকা ধান কাটতে না পারা ও রোদের অভাবে কাটা ধান শুকাতে না পেরে উৎকণ্ঠায় দিন যাপন করছেন কৃষকেরা। অনেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দৈনিক হাজিরার শ্রমিক নিয়ে আবার অনেক চুক্তিদিয়ে পাকা ধান কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। শ্রমিক স্বল্পতার মধ্যে কিছু পাকা ধান কাটা হলেও বৃষ্টির কারণে ধানের খড়-কুটা পচে যাওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দেবে বলেও জানান চাষিরা। মাঠের ধান কাটার জন্য কাউনিয়ায় ধান কাটার শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। ধান কাটতে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ শ্রমিক অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাই তারা এবার ধান কাটছে না। 

বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের কৃষক  প্রহলাদ চন্দ্রও সামছুল হক জানান, মজুরি হিসেবে এক মণ ধানের দাম দিয়েও মিলছে না একজন শ্রমিক। গদাই গ্রামের কৃষক গফুর আলী ও আলামিন জানান, হঠাৎ তিস্তা নদীতে বন্যায় নদী পাড়ের ধান নষ্ট হয়ে গেছে এখন মাঠের ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছি না। তারা বলেন, সবার ধান এক সঙ্গে পেকে যাওয়ায় শ্রমিকের সংকট তৈরি হয়েছে। সঠিক সময়ে ধান কাটতে না পারলে তাদের চরম লোকশান গুনতে হবে। রাজিব গ্রামের কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, শ্রমিক সংকটের কারণে তিনি এখন পর্যন্ত এক শতাংশ জমির ধানও কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। বেশির ভাগ ধান কাটা শ্রমিক চলেগেছে বগুরা, ফেনী, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায়, ফলে শ্রমিক সংকট তিব্র আকার ধারন করেছে। নাজিরদাহ গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, শ্রমিক সংকট তো আছেই। যে দু’একজন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে, ৮-৯’শ টাকা মজুরিতে তারাও আবার জমিতে পানি থাকার কারণে কাজ করতে চায় না। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম জানান, শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক জায়গায় ধান কাটা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্র্ককতা শাহানাজ পারভীন জানান, উপজেলায় ৭৫১৪ হেক্টর রোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল কিন্তু অর্জন হয়েছে ৭৫৫০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৩১৮৪০ মেঃটন চাল। শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকেরা ধান কাটতে পারছেন না এমন কথা শোনা যাচ্ছে। বাইরের জেলায় শ্রমিক চলে যায়ায় হয়তো শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আমরা কৃষককে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। ইতোমধ্যে ২টি হারভেষ্টার ম্যাশিনও ১টি পাওয়ারথ্রেসার ম্যাশিন বিতরণ করা হয়েছে। আশা করছি কৃষক ভালভাবেই সোনালী ফসল গোলায় তুলতে পারবে। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত