মাসে ২৫ লাখ টিকা দিলে শেষ হবে কবে  

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৬ জুন ২০২১, ২০:০০ |  আপডেট  : ৫ মে ২০২৪, ১৫:১৭

প্রাণঘাতী করোনা মাথায় রেখে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে যতটা নজর দেওয়া উচিত ছিল, ততটা দেওয়া হয়নি। বাজেটে সবার টিকার প্রাপ্তির বিষয়েও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নেই। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত ওয়েবিনারে আজ রোববার বাজেট–পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা এসব কথা বলেন।

বাজেটে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষ টিকা পাবেন। প্রতি মাসে মাত্র ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দিলে শেষ কবে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা। তত দিনে করোনার অবস্থান এবং আক্রান্তের হার কোথায় যায়, তা নিয়ে উদ্বেগ জানান তাঁরা। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই টিকার কার্যক্রম শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা। 

অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব উল ইসলাম, অ্যামচেমের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ কামাল, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয়, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।

পিআরআই নির্বাহী পরিচালক বলেন, অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি মাসে ২৫ লাখ করে টিকা দেওয়ার কথা বলেছেন। মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিলে এর কার্যক্রম শেষ করতে সময় লাগবে চার বছর। তত দিনে করোনার কী অবস্থা হয়, কেউ জানে না। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন টিকা দেওয়া হয় ২০ লাখ মানুষকে। পরে সেটি বাড়িয়ে প্রতিদিন করা হচ্ছে ৪০ লাখ করে। টিকা প্রাপ্তিতে এত সময় না নিয়ে আগামী অর্থবছরের মধ্যেই টিকার কার্যক্রম শেষ করার তাগিদ দেন আহসান এইচ মনসুর।

যদিও প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপীই রাজনীতি চলছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আমরা প্রতিশ্রুত টিকা পাইনি। তবে টিকা পাওয়ার বিকল্প চেষ্টা করছি। আশা করছি শিগগিরই অন্য দেশের টিকা মিলবে।’

আতিউর রহমান মূল প্রবন্ধে বলেন, করোনার সময়ে স্বাস্থ্য খাতে যতটা বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল, ততটা দেওয়া হয়নি। বাজেটে টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেন তিনি।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এমএফএস) করপোরেট কর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর কঠোর সমালোচনা করা হয় আজকের বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে। আতিউর রহমান বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কর এখন ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ। এটাকে বাজেটে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকার যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছে, সেখানে এমএফএসের ওপর করপোরেট কর বাড়ানোর প্রস্তাব সাংঘর্ষিক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসানো অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেন আতিউর রহমান।

আফতাব উল ইসলাম বলেন, করোনায় নতুন করে অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। সরকার দেশে ধনী–দরিদ্রের একটি তালিকা করছে। তবে এখনো ওই তালিকা প্রকাশ হয়নি। করোনার এই সময়ে ধনী–দরিদ্রের একটি তালিকা থাকা জরুরি বলে মত দেন তিনি।

ওয়েবিনারে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হবে বলে কেউ কেউ মত দেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত