মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি , আলোচনায় সমাধানের চেষ্টা করছি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৪ মার্চ ২০২৪, ১৩:৪২ |  আপডেট  : ৪ মে ২০২৪, ০৬:১৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাইনি। আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সোমবার (৪ মার্চ) পিলখানায় বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২৩ এর অনুষ্ঠানে সীমান্তের নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।সকালে সাড়ে ৯টায় পিলখানায় উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি। পরে বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবির ৭২ সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন। 

বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেসব এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশসহ সশস্ত্র বাহিনী নজরদারি রাখছে। আমরা মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। যাতে করে আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাই এবং এই আশ্রিত শরণার্থীদের যেন আমরা ফেরত পাঠাতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানামরের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে বাংলাদেশ সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সংঘাতের ফলে বিজিবির সদস্যগণও অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তবুও বিজিবি সদস্যগণ একটি বুলেটও ফায়ার না করে অত্যন্ত ধৈর্য ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। সহনশীলতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করায় তিনি বিজিবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, স্থল সীমানা চুক্তি ভারতের সঙ্গে করে গিয়েছিলেন জাতির পিতা। তিনি কিন্তু সংবিধান সংশোধন করে আইন করে গিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো জাতির পিতাকে হত্যার পর যারাই ক্ষমতা এসেছে, সীমান্ত নিয়ে, সীমান্ত অধিকার নিয়ে, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ঠিক তেমনি সমুদ্র সীমায় আমাদের যে অধিকার আছে সেই আইনও তিনি ১৯৭৪ সালে করে যান। কিন্তু ১৯৭৫ পরবর্তীতে কোনো সরকার সেটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসর পর আমরা সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছি। ভারতের পার্লামেন্টে সব দল মিলে তারা কিন্তু ভোট দিয়ে এই চুক্তি বাস্তবায়ন করে দিয়েছিল। ছিটমহল বিনিময় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে করে আমরা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। ছিটমহল বিনিময়ে বিজিবিও বিরাট ভূমিকা পালন করেছেন।

সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান রোধ, মাদক ও নারী-শিশু পাচার রোধসহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন এবং সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বিজিবির দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন, যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, দেশ গঠন ও জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবির পেশাদারিত্ব সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। 

ভাষণ প্রদান শেষে প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘প্রেরণা’র শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর ডগ মার্চ, ট্রিক ড্রিল, বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রা এবং বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ শেখ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সম্মিলিত প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বিজিবি’র মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ বিশেষ করে নারী সৈনিকদের ড্রিল দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হন। তিনি বিজিবিতে বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত