নদীমাতা দেশ

  সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২২, ১৮:৫১ |  আপডেট  : ৩ মে ২০২৪, ০৯:৪৯

ঝর্না রহমান 
----------------------


নদী আছে সব দেশে, আছে নদীতীর,
নাই নাই এরকম পলিমাটি খির!
পলিমাটি খির চেনো? তা কি খাওয়া যায়?
দাদি বুঝি বেড়ে দেন কলার পাতায়?
জিভ দিয়ে চেটেপুটে খেয়েছ কি পলি?
আরে ধুর বোকারাম! তবে শোন বলি,
বর্ষায় নদী জলে নামে যেই ঢল
জলস্রোত নিয়ে আসে নরম পলল
মাখনের মত সেই কাদা পলিমাটি
জমিগুলো করে তোলে একেবারে খাঁটি।
সে পলির খির খেয়ে, মাখিয়ে মাখন
মাঠে মাঠে শুরু হয় বীজের বপন।
বীজ ফুঁড়ে অংকুর ধান তিসি তিল
কাউনের শীষগুলো করে ঝিলমিল। 
সোনালি পাটের চারা সবুজ রেশম
বিল জুড়ে বুক-জলে ছড়ায় পেখম
পাটখেত ভেসে-থাকা সবুজিয়া জল
এই জল জল নয় আয়নামহল।
আয়নায় মুখ দেখে নদীমাতা দেশ
এই মাতা বাংলা যে আমার স্বদেশ। 
নদী আছে নানা দেশে হাওয়া ঝিরিঝির,
নাই নাই এরকম স্নিগ্ধ সমীর!
সমীর মানে কী জানো? আরতীর দাদা?
আরে ধুর বোকারাম! একেবারে হাঁদা!
সমীরের মানে হল শীতল বাতাস
যার সাথে মিশে থাকে জলের সুবাস,
মিশে থাকে বাষ্পের মত মিহি দানা
ওগুলো ছিটিয়ে দেয় কচুরির পানা।
দুপুরের ঘন রোদে নায়ের বাতায়
পানিকাউ নেমে আসে, পাখনা নাচায়,
গলুইয়ের আগা থেকে ঝাঁপ দেয় জলে
এক ডুবে চলে যায় নদীর অতলে
ঠোঁটে করে তুলে আনে ছটফটে মাছ
রোদ্দুরে ঝিলমিল করে যেন কাচ।
কাচ ভাঙা মাছ থেকে আমিষের ঘ্রাণ
নদীর বাতাসে মাখে আঁশটে সাবান
নাও আর জাল থেকে গাব-গালা কষ
নদী-ধোওয়া হাওয়া করে দিব্যি সরস!
এ হাওয়াটা সমীরণ! অন্যরকম!
নদীতীরে বুক ভরে টেনে নাও দম!
দম টানো, দম নাও, শুদ্ধ বাতাস
এ বাতাসে বেঁচে থাকি নিই নিঃশ্বাস 
এই জল এই হাওয়া এ মাটির কণা
এ সবের নাই নাই কোনোই তুলনা।

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত