তিস্তার বালু চরে সফলতার সাথে বাদাম চাষ
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:২৪ | আপডেট : ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৭
তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরে বাদাম চাষ করেতে বাদাম বীজ উৎপাদন করে সফলতার স্বপ্ন দেখছে কাউনিয়ায় বিভিন্ন চরাঞ্চলের কৃষক। কাউনিয়ায় চলতি মৌসুমে বাদাম বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর বেশী জমিতে চাষ হয়েছে, ফলনও হয়েছে ভাল। সরেজমিনে তিস্তানদী বেষ্টিত বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, রাক্ষুসে তিস্তার ভাঙ্গা-গড়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকে চরাঞ্চলের মানুষগুলো। তিস্তার বুকে জেগে ওঠা বালুচর অবহেলিত মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম অবলম্বন। তিস্তা নদীর বুকজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় বালুচরে দীর্ঘদিন ধরে বাদাম চাষ করছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। চরে পরিত্যক্ত বিরাণভূমি এখন আর চোখে পড়ে না। এসব জমিতে আবহাওয়া উপযোগী এবং সীমিত উৎপাদন খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় উচ্চ ফলনশীল বীজ বাদাম চাষ করছেন চাষিরা। চরের জমিতে আবহাওয়া উপযোগী এবং সীমিত উৎপাদন খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় উচ্চ ফলনশীল বীজ বাদাম চাষ করছেন চাষিরা। অর্থকরী ফসল বিকল্প এ ফসল চাষে লাভের মুখ দেখছেন এ অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকরা।
চরগনাই গ্রামের কৃষক দুদু মিয়া জানান, "তিস্তার বালু চরে ধানের আবাদ করা যায় না। চরাঞ্চলের পতিত অবস্থায় পরে থাকা জমিতে বাদাম আবাদ করার জন্য বীজ বাদাম আবাদ করেছি। প্রতি দোন (২৫শতক) জমিতে বীজ বাদাম আবাদ করতে ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দোনে ৭-৮ মণ বাদাম হবে। প্রতি মণ বীজ বাদাম ৭০০০-৭৫০০ টাকা বিক্রি হবে। আমি দুই দোন (৫০শতক) জমিতে বীজ বাদাম করে ১৩/১৪ মন বীজ বাদাম পেয়েছি।" একই কথা জানালেন চর নাজিরদহ গ্রামে কৃষক ডাঃ মাহাফুজার রহমান বসুনিয়া। কৃষকরা জানান, জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বছরের দুই মৌসুমে বিপুল পরিমাণ জমিতে চাষ হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল বাদাম। বিশেষ করে রংপুরের কাউনিয়ায় বাদাম চাষ কৃষিতে এক নতুন বিপ্লব এনে দিয়েছে। সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় অবশ্য হতাশার কথা জানিয়েছেন চাষিরা। সাদা বালুর জমিনে সবুজ আর সবুজে ছেয়ে গেছে লতানো বাদামের গাছে। প্রতিটি বাদাম গাছের মুঠি ধরে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা সোনালি রঙ্গের চিনাবাদাম। কৃষক জানায় ভাদ্র থেকে আর্শিন মাসে বীজ বাদাম রোপন করা হয় এবং অগ্রহায়ণ পৌষ মাসে উত্তোলন করা হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানা, উপজেলায় বাদাম বীজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল ৫০ হেক্টর, চাষ হয়েছে ৭০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন দাম ভাল পাচ্ছে কৃষক। উন্নত প্রযুক্তি, ঋণসুবিধাসহ উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারলে এখানকার উৎপাদিত বাদাম গ্রামীণ জনপদের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত