তবুও স্বাগতম নতুন বছরকে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৪৭ |  আপডেট  : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬

গতকাল সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নিয়েছে বহু কাক্সিক্ষত-অনাকিিক্সক্ষত ঘটনার সাক্ষী ১৪২৭ বাংলা বর্ষ। কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেল আরেকটি বছর। আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গণনা শুরু হয়েছে ১৪২৮ বঙ্গাব্দ। 

নানা কারণেই ১৪২৭ সনটি আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন কিছু ঘটনা গেল বছরটিতে ঘটেছে, যেগুলো আমাদের জাতীয় জীবনকে নাড়া দিয়েছে বেশ ভালোভাবেই। বিশেষত বৈশ্বিক মহামারী করোনার আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। জীবনহানির পাশাপাশি মানুষের রুটিরুজির ক্ষেত্রে এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। স্থবির হয়ে গেছে আমাদের অর্থনীতির চাকা। অনেক শ্রমজীবী মানুষ তাদের আয়-রোজগারের অবলম্বন হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে, ব্যবসায়ীরা হারিয়েছেন তাদের পুজি। ধারণা করা হয়েছিল, করোনার প্রথম আঘাত সামলে নিয়ে আমরা হয়তো ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াব। কিন্তু হঠাৎ করে দ্বিতীয় ঢেউ এসে আবার সব এলোমেলো করে দিত উদ্যত হয়েছে। করোনার প্রকোপ থেকে জনজীবন রক্ষায় তাই সরকার নতুন বছরের শুরু দিন থেকেই ঘোষণা করেছে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন। ফলে প্রতি বছর বর্ষবরণের যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যেত, গতবারের মতো এবারও তা অনুপস্থিত থাকছে। ফলে নিরানন্দ পরিবেশেই নতুন বছরটিকে আমাদের বরণ করে নিতে হচ্ছে। তারপরও নতুন বছরকে আমরা স্বাগত জানাই। পুরানো সব ভুল-ভ্রান্তি শুধরে নিয়ে, ক্লান্তি-অবসাদ ঝেড়ে ফেলে নতুন করে এগিয়ে যাবার প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত হতে চাই।

আমাদের অনেক আনন্দ-উচ্ছ্বাসের দিন থাকলেও বাংলা নববর্ষ কিছুটা ভিন্ন আমেজ বহন করে থাক। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ দিবসটির আনন্দ উপভোগ করে থাকে। অন্য অনেক কিছুতে রাজনৈতি মতপার্থক্য আমাদের বিভক্ত করলেও নববর্ষ পালনে তা কখনোই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না। পয়লা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে ওতোপ্রতোভাবে। আমাদের দেশের মানুষেরা দিনটি শুরু করতে চান আনন্দঘণ পরিবেশে মধ্য দিয়ে। বছরের শুরুটা ভালো হলে পুরো বছরটি ভালো কাটবে- এমন একটি সংস্কার রয়েছে অনেকের মধ্যে। ব্যবসায়ীরা এ দিনে পুরানো হিসাব-নিকাশ সমাপ্ত করে নতুনভাবে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেন। দোকানে দোকানে হয় শুভ হালখাতার মহরত। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত অ লে বসে বৈশাখী মেলা। সেসব মেলায় বাচ্চাদের খেলনা, নানারকম তৈজসপত্র, মিষ্টি-ম-ার বিপুল সমারোহ ঘটে। আসর বসে নাগরদোলা কিংবা পুতুল নাচের। মোট কথা, পয়লা বৈশাখ এক অনাবিল আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে আমাদের বাংলাদেশ।

দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এবারসহ পরপর দুইবার আমরা বংলা নববর্ষ বরণের সে চিরাচরিত আমেজ-উৎসব থেকে বি ত হলাম। এজন্য কাউকে দায়ী করা যাব না। কারণ প্রকৃতির ওপর কারো হাত নেই। আল্লাহ প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁর ফয়সালাকে মেনে নিতেই হবে।

এই শুভদিনে আমরা গ্রামনগরবার্তার পাঠক, পৃষ্ঠপোষক, শুভানুধ্যায়ী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। করোনরার ভয়াবহতা কাটিয়ে সবার জীবনে ফিরে আসুক শান্তি, স্বস্তি, সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দ।  আগামী বছরটি হয়ে উঠুক নিরাপদ ও ভয়হীন- বছর শুরু দিনে এই আমাদের কামনা। শুভ নববর্ষ।   
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত