জরুরি বিভাগে ডাক্তার অনুপস্থিত, গুরুতর আহত শিশুর চিকিৎসা দিলেন ওয়ার্ড বয়

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:২৯ | আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২২

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে । জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না পেয়ে রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এমনকি গুরুতর আহত রোগীর সেলাই পর্যন্ত করেছেন ওয়ার্ড বয়!
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের জুগিকাটা গ্রামের ফরহাদ হোসেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের লতাপাড়া গ্রামে। এসময় তার ছেলে মেহেদি হাসান খেলতে গিয়ে কার্তি দিয়ে হাত কেটে ফেলেন। অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে দ্রুত বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।
কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসক নেই ! এমতাস্থায় কর্তব্যরত ওয়ার্ড বয় শহিদুল ইসলাম বাধ্য হয়ে শিশুর আঙুলে দুটি সেলাই দেন। প্রায় বিশ মিনিট পর স্বজনরা বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানালে তড়িঘড়ি করে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. রোমেনা বেগম জনি হাসপাতালে আসেন।
এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রতিদিনই ডাক্তার সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
গলা ব্যথার কারণে চিকিৎসা নিতে আসা কালিবাড়ি এলাকার রঞ্জন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হাসপাতালে বসে আছি। কিন্তু কোনো ডাক্তার নেই। জরুরি বিভাগে যদি ডাক্তারই না থাকে, তাহলে এখানে এসে আমরা কী লাভ করলাম?”
অন্যদিকে রোগী সানজানা ইসলামের অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত জরুরি বিভাগে নিয়ে আসি। কিন্তু প্রায় ৪০ মিনিট অপেক্ষার পরও কোনো ডাক্তার আসেননি। আমরা ভীষণ ভোগান্তিতে পড়েছি।”
রোগী মমতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছি। ডাক্তার নেই, রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। এটা কেমন স্বাস্থ্যসেবা?”
অভিযোগের বিষয়ে চিকিৎসক ডা. রোমেনা বেগম জনি বলেন, “আমরা এমন না যে সেবা দিচ্ছি না। আমার ছোট বাচ্চা আছে, এজন্য আধা ঘণ্টা দেরি হতে পারে। সাধারণত জরুরি রোগী এলে আমাকে জানানো হয়। আমি ভেবেছিলাম অন্য ডাক্তার আছেন, কিন্তু আমাকে ইনফর্ম করা হয়নি।”
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুল কবীর বলেন, “জরুরি বিভাগে ডাক্তার ছিলেন না—এটা আমার জানা নেই। তখন কোন ডাক্তার ডিউটিতে ছিলেন তা খোঁজ নিয়ে জানানো হবে। তবে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার থাকার কথা।”
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত