চীনের সঙ্গে ৫৪ কোটি ডলারের চুক্তিতে পৌঁছেছে তালেবান
প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৫৩ | আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:১০
তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে উন্নয়নে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৫৪ কোটি ডলারের চুক্তিতে পৌঁছেছে তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান। ২০২১ সালের আগস্টে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে এটি প্রথম বড় ধরনের বিনিয়োগ।
ইসলামি মৌলবাদী ভাবাদর্শের দেশ আফগানিস্তান ও কমিউনিস্টপন্থী দেশ চীনের এই চুক্তির কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে রুশ সংবাদ সংস্থা আরটির এক প্রতিবেদনে।
২০ বছর পর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়। এরপর দেশটির ক্ষমতায় আসে তালেবান। বেইজিং তালেবানকে আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে প্রতিবেশী এই দেশটির বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে ওয়াকিবহাল দেশটি। চীনে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও কৌশলের ক্ষেত্রে আফগানিস্তান এসব কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
চীন যখন জ্বালানি নিরাপত্তার মুখোমুখি হয়েছে, তখনই কৌশলগত কারণে তালেবানের সঙ্গে চুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীন জনবহুল দেশ ও শিল্প জায়ান্ট। দেশটি বিশ্বের জ্বালানি খাতের বড় ক্রেতা।
শিল্পে ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের কারণে বাড়তি চাহিদা মেটানোর মতো অভ্যন্তরীণ সম্পদ নেই চীনের হাতে। এ কারণে চীন তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের অন্যতম প্রধান আমদানিকারক দেশ। রাশিয়া, ইকুয়েডর ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সাম্প্রতিক অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে এটি চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
এসব দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তাই এখনো জোরালো। জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে চীনের কৌশলগত দুর্বলতা রয়েছে। রাশিয়া ছাড়া উপসাগরীয় এসব দেশ থেকে সাগরপথে চীনে জ্বালানি আমদানি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিকীকরণের আওতায় থাকা বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের ওপর নির্ভর করতে হবে। যেমন বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর।
যুক্তরাষ্ট্র চীনে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। চীনের সঙ্গে যেকোনো সংঘাতের ক্ষেত্রে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ব্যয়বহুল হলেও যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের অবরোধ আরোপ করে। মালাক্কা প্রণালির মতো কৌশলগত চেকপয়েন্টগুলোয় যুক্তরাষ্ট্র কৌশল নিয়েছে।
এই দুর্বলতা চিহ্নিত করে গত কয়েক বছরে চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) নিয়েছে। মার্কিন বলয়ের বাইরে গিয়ে আন্তমহাদেশীয় সড়ক, রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে ইউরেশিয়াতে একীভূত করতে চাইছে। এসব পথে চীন থেকে পণ্য আনা-নেওয়ার অবাধ সুযোগ থাকবে।
এর অন্যতম উদাহরণ চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (সিপিইসি)। বিআরআইয়ের সংযোগ স্থাপক এই করিডর দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ভারত সাগরে যাওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার সহজ পথ তৈরি হচ্ছে।
তবে বিআরআইয়ের অন্তর্ভুক্ত কোনো কৌশলগত রোডম্যাপই আফগানিস্তানকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। মধ্য এশিয়ার দেশটি চীন সীমান্ত, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সংযোগকারী সড়ক হিসেবে অবস্থান করছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত