খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত, নতুন পরামর্শ মেডিকেল বোর্ডের
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২২, ২০:৫১ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৬
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়ে মেডিকেল বোর্ড। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনা শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ধীরে ধীরে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড।
সোমবার (১৩ জুন) বোর্ড বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে তার সুরক্ষায় আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সপ্তাহখানেক মেডিকেল বোর্ডের নিবিঢ় পর্যবেক্ষণে থাকবেন থাকবেন তিনি।
দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের সমন্বয়ে দেড় ঘন্টাব্যাপী চলে বোর্ডের বৈঠক। লন্ডন ও আমেরিকা থেকে বিদেশি চিকিৎসকরা জুমে যোগ দেন। বোর্ড সম্বয়ক খালেদা জিয়ার পুত্রবধু ডা. জোবাইদা রহমানও ছিলেন বৈঠকে। বৈঠক শেষে দুইজন চিকিৎসক এসব তথ্য জানান।
সোমবার সন্ধ্যায় একজন চিকিৎসক বলেন, মেডিকেল বোর্ড তো পরিবারের কাছে ম্যাডামের সবশেষ শারীরিক অবস্থা অবহিত করেছেন। সুপারিশ করেছেন যতদ্রুত সম্ভব হাই কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। সেখানে মাল্টিপুল চিকিৎসা সম্ভব। কারণ ম্যাডাম এখন যে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তা দেশেই চিকিৎসা সম্ভব, কিন্তু এক চিকিৎসা করতে গিয়ে অন্যগুলো বেড়ে যায়। এতে ঝুঁকি থেকেই যায়। আবার বয়সেরও একটা ব্যাপার আছে। এ পর্যায়ে এসে উনাকে ক্রিটিক্যালও বলা যাচ্ছে না, আবার ভালোও বলা যাবে না।
আরেকজন চিকিৎসক রাতে জানান, সোমবার রাতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের আরও কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। এভারকেয়ার ছাড়াও ল্যাবএইড হাসপাতালে পরীক্ষা করা হয়। পরে রেজাল্ট বিদেশি চিকিৎসকদের প্রেরণ করা হয়।
তিনি বলেন, বোর্ডের পরামর্শ মোতাবেক ম্যাডামের জন্য বাসা থেকে বাবুর্চি রান্না করে খাবার নিয়ে আসেন হাসপাতালে। আপাতত সুপসহ তরল খাবারই দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া তেমন কথা বলেন না। শরীর স্বাভাাবিকভাবেই ক্লান্ত।
হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় গত শুক্রবার দিবাগত রাতে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত বছরের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফা এভারকেয়ারে ভর্তি করা হলো। এর আগে গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
জানা গেছে, মেডিকেল বোর্ডে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ জন চিকিৎসক আছেন। আর বাইরে থেকে আরও ৬ জন চিকিৎসক যুক্ত আছেন। যখন যে বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় বোর্ড সমন্বয়ক তাকে কল করেন। বোর্ডের নেতৃত্বে আছেন এভায়কেয়ারের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদার।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। এরপর থেকে গুলশানের বাসায় থাকছেন তিনি। ২০২১ সালে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করার পর খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া খালেদা জিয়া অনেক দিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত