কেন বাংলা টাইগার্স, কী হবে এই প্রোগামে?
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:৪৯ | আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:২৭
জাতীয় দল থেকে ছিটকে যাওয়া কিংবা জাতীয় দলের আশপাশের ক্রিকেটাররা নিজেদের প্রস্তুতির সুযোগ সেভাবে পান না। শুধু তা-ই নয়, এক ফরম্যাট খেলা মুমিনুল হক-খালেদ আহমেদ-সাদমান ইসলামদেরও বেশিরভাগ সময় বসে থাকতে হয়। এই সব ক্রিকেটারের প্রস্তুতিটা ঠিকমতো করতে ‘বাংলাদেশ টাইগার্স’ নামে ‘ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিসিবি। সেটিই আলোর মুখ দেখলো। ২৩ ক্রিকেটার নিয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ টাইগার্সের যাত্রা।
শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টাইগার্সের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ টাইগার্সের চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ। সেখানে আরও ছিলেন গেম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন, বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী ও বিসিবি পরিচারক ওবেদ আর নিজাম।
বাংলা টাইগার্সে খেলোয়াড় বাছাই করার প্রক্রিয়া নিয়ে কাজী ইনাম বলেছেন, ‘বগুড়ায় হচ্ছে আমাদের প্রথম প্রোগ্রাম। এটার জন্য নির্বাচকরা একটি দল দিয়েছেন। তাদের সেখানে তিন ধরনের ক্রিকেটার রাখার কথা বলা হয়েছিল। জাতীয় দলের যদি কোনও সিরিজ চলে, অন্য সংস্করণের খেলোয়াড় সেই সিরিজে যদি না খেলে, তাহলে সে এই প্রোগ্রামে আসতে পারে। সম্প্রতি জাতীয় দলে খেলেছে এবং কোনও কারণে সেখান থেকে বাদ পড়েছে, সেটা ফর্ম হারিয়ে হতে পারে কিংবা চোটের জন্যও হতে পারে, ফিট হয়ে সে এই স্কোয়াডে আসতে পারে। আবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ কিংবা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলে অনেকেই জাতীয় দলে যেতে পারে, সেখানে যাওয়ার আগে তাদের আমরা এই স্কোয়াডে রাখতে পারি।’
বাংলা টাইগার্সের দল নিয়ে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে জাতীয় দলের ‘টিম ডিরেক্টর’ ও বিসিবি পরিচালক সুজন বলেছেন, ‘ঘুরেফিরে জাতীয় দলের সব খেলোয়াড় এখানে থাকবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা খেলবো সাদা বলে- ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। সামনে আমরা যখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট খেলবো তখন হয়তো ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের খেলোয়াড়রা এখানে থাকবে।’
সুজন আরও যোগ করেছেন, ‘আমাদের একটা বড় সমস্যা ছিল, যখন জাতীয় দল দেশের বাইরে খেলতে যায় তখন অন্য সংস্করণের খেলোয়াড়রা দেশেই থাকে, তারা কোনও প্রোগ্রামে থাকে না। তারা এখন থেকে এটাতে থাকবে। এর বাইরে ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোর টপ পারফরমাররা এখানে আসতে পারে। বছরজুড়েই এটা চলবে।’
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্প চলবে। মূলত টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুলের কথাতেই বগুড়া বেছে নেওয়া। এ প্রসঙ্গে কাজী ইনাম বলেছেন, ‘এই ভেন্যুর কথা বলেছেন মূলত টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। তিনিই সুজন ভাইকে বলেছিলেন, এখানকার উইকেট অনেক ফাস্ট। এর সঙ্গে আমরা নিজেদের পুরনো একটা আন্তর্জাতিক ভেন্যু ব্যবহার করতে পারছি। সেই কারণে আমরা বগুড়াকে বেছে নিয়েছি। এটা কেবল শুরু, আশা করি এই প্রোগ্রাম ভালোভাবে চলবে।’
ঠিক কী কারণে এমন প্রোগ্রাম বেছে নেওয়া, সেটিও জানালেন বাংলাদেশ টাইগার্স নিয়ে স্বপ্ন দেখা কাজী ইনাম, ‘এইচপিতে অনূর্ধ্ব-২৩ বেশি থাকে। অনূর্ধ্ব-১৯-এর খেলোয়াড়রা বেশি থাকে। এর বেশি বয়সী খেলোয়াড়রা কোথায় যাবে? সৌম্য এখন কোথায় যাবে? একটা জায়গা তো থাকতে হবে, যেখানে আমরা বছরজুড়ে ওদের সাপোর্ট দিতে পারি। উদাহরণ হিসেবে তাসকিনের কথা বলতে পারি। যখন সে জাতীয় দলে ছিল না, সে কিন্তু মহামারীর সময় নিজে নিজে অনুশীলন করে গতি বাড়িয়েছে, জাতীয় দলে ফিরে এসেছে। এইটাই আমরা প্রোগ্রাম আকারে করতে যাচ্ছি। আমরা জাতীয় দলের পুল বড় করতে চাচ্ছি। পাইপলাইন বড় করতে চাইছি, যেন একজন খেলোয়াড় সবসময় প্রস্তুত থাকে।’
দেশের ভেন্যুতেই শুধু নয়, সম্ভব হলে দেশের বাইরেও ক্যাম্প আয়োজনের পরিকল্পনার কথা শোনালেন কাজী ইনাম, ‘এরপর রাজশাহী, কক্সবাজার কিংবা অন্য কোনেও ভেন্যুতে ক্যাম্প হতে পারে। এই মুহূর্তে দেশের বাইরে ক্যাম্প করার কোনও পরিকল্পনা নেই। কিন্তু দেশের বাইরে ওদের অনুশীলন ক্যাম্পে পাঠানোর ভাবনা আমাদের আছে। ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় আমরা ২০-৩০ দিনের জন্য যদি পাঠাতে পারি, খুব ভালো হয়। এমন চেষ্টা আমাদের আছে।’
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন, শুধু খেলোয়াড় নয় স্থানীয় কোচদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে চান তারা, ‘আমরা জাতীয় দলের পুল বড় করতে চাইছি। পাইপলাইন বড় করতে চাইছি। যেন একজন খেলোয়াড় সবসময় প্রস্তুত থাকে। কোচ ও খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের জন্য সবসময় প্রস্তুত রাখা এই প্রোগ্রামের লক্ষ্য।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত