কাউনিয়ায় কৃষকের মুখে হাসি, উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ৪৭ হাজার মেঃটন চাল

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৪ জুন ২০২১, ১৪:৫২ |  আপডেট  : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:৫৪

কাউনিয়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে মাঠে ফসলের ভাল অবস্থা ও দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সরেজমিনে উপজেলার পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ফসলী মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় রোগ বালাইয়ের প্রার্দুরভাব কম হওয়ায় এবং প্রাকৃতিক তেমন কোন দূর্যোগ না হওয়ায় কিছু কিছু জায়গায় ২৮ ও ২৯ জাতের ধান ব্যাতিত বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকার চালের কেজি ৪০ টাকা নির্ধারন করায় ভাল দাম পওয়ার আশা করছে এলাকার কৃষক। 

উপজেলা দিগন্ত মাঠ জুড়ে সোনালী রংয়ের ঝিলিক, শীষ বাতাসে যখন দোল খায় কি অপুরূপ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। কৃষক-কৃষাণীর মনে ফসলের অবস্থা দেখে আনন্দের ঢেউ লেগেছে। এখন পর্যন্ত প্রকৃতি বৈরী না হলে আর কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষকের গোলায় উঠবে সোনালী ধান। ইতিমধ্যে হাট-বাজার গুলোতে কাচি, কুলা, ডালি, গোলা বিক্রির ধুম পড়েছে। বাঁশ ও বাঁশজাত দ্রব্য বিক্রেতারা এই মৌসমটির অপেক্ষায় থাকে। এ মৌসমে তাদের ব্যবসা ভাল হয়। গদাই গ্রামের কৃষক শাহাজাহান মন্ডল, নিজপাড়া গ্রামের প্রহলাদ চন্দ্র, হরিশ্বর গ্রামের শাহাব উদ্দিন, রাজিব গ্রামের হাবিবুর ডাক্তার, নিজদর্পা গ্রামের আমিন উদ্দিন জানায় এবার বিদ্যুতের কিছুটা সমস্যা থাকলেও সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ভাল ফলন হয়েছে। আল্লাহ সহায় আছে বলে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন জানান উপজেলায় ৭৫৫৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে অর্জন হয়েছে ৭৫৭৫ হেক্টর জমিতে। বেশীর ভাগ হাইব্রীড ও উফশি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। 

ইতিমধ্যে বিরি ২৮ জাতের ধান সহ প্রায় ৯০ ভাগ ধানা কাটা শেষ হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে অন্য সকল ধানই কাটাও শেষ হবে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ৪.১৫ মেঃটঃ চাল। সে অনুযায়ী ৪৭১৫৪ মেঃটন চাউল উৎপাদন হবে। করোনা কালেও সরকার কৃষকের ফলন বৃদ্ধির ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা তারিন জানান, সরকার খাদ্য নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরির লক্ষ্যে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। কৃষক যেন সেচ কাজে সঠিক সময়ে সার ও বিদ্যুৎ পায় সে ব্যাপারে তদারকি ছিল এবং এখনও আছে। সার, বীজ, ডিজেল, কীটনাশক এর বাজার সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়।  বিশেষ করে এবার এই উপজেলায় সারের কোন সংকট হয়নি। বিদ্যুৎ এর কিছু সমস্যা থাকলেও প্রকৃতি বৃষ্টি দিয়ে তা পুষিয়ে দিয়েছে। সরকার এবার ধান ২৮ টাকা ও চাউল ৪০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করছে। ফলে কৃষক ধানের ভাল দাম পাচ্ছে। করোনা কালেও আল্লাহর রহমতে ও কৃষকের অক্রান্ত পরিশ্রমে এবার উপজেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে। সার্বিক ভাবে কাউনিয়া উপজেলা চলতি বোরো মৌসমে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মূখে হাসি ফুটে উঠেছে। তবে কিছু কিছু কৃষক উৎপাদন খরচ অনুপাতে ধানের দাম বৃদ্ধির দাবী জানিয়েছে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত