কলকাতার স্টেডিয়ামে ভাংচুর ও পুলিশের লাঠি চার্জ, বেরিয়ে গেলেন মেসি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:০০ |  আপডেট  : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৬

বেশ কয়েক মাস আগেই জানা গিয়েছিল ভারত সফরে আসছেন লিওনেল মেসি। এরপর থেকেই তাকে এক পলক দেখার অপেক্ষায় ছিল ফুটবল ভক্তরা। তার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য প্রায় ১৩ লাখ টাকা করে খরচ করেছেন ১০০ জন দর্শক। এ ছাড়াও চড়া দামে বিক্রি করা হয়েছে স্টেডিয়ামের টিকিট।

কিন্তু তারপরও মেসিকে ভালোভাবে দেখার সুযোগ পায়নি তার ভক্তরা। যা সহজে মানতে পারেনি ভারতীয়রা। তাই স্টেডিয়ামের চেয়ার ভাংচুর করেছে তারা। মেসির তিন দিনের সফরে প্রথম দিনেই এই ঘটনা ঘটেছে।

সফর সূচি অনুসারে, শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় যুবভারতীর মাঠে ঢোকে মেসির গাড়ি। ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন তিনি।

তবে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু মানুষ ঘিরে ধরেন তাকে। ফলে গ্যালারি থেকে প্রায় ২০ মিনিট মেসিকে দেখাই যায়নি। এক সময় ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান দিতে শুরু করেন।

মেসি যুবভারতীতে পৌঁছোতেই অন্তত ৭০-৮০ জন মানুষের ভিড় ঘিরে ধরে তাকে। মূলত মন্ত্রী, কর্তারাই ঘিরে ধরেন মেসিকে। তাকে ভালো করে হাঁটার জায়গাটুকুও দিচ্ছিলেন না কেউ কেউ! ক্যামেরা এবং মোবাইল হাতে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। 

মেসিকে ঘিরে রাখেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। গ্যালারি থেকে তাকে দেখা যাচ্ছিল না। চড়া দামে টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে যাওয়া ফুটবলপ্রেমীদের ভরসা ছিল স্টেডিয়ামের তিনটি জায়ান্ট স্ক্রিন। মোহনবাগান এবং ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে মেসি পরিচিত হওয়ার সময়ও ভিড় ঘিরে ছিল তাকে। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্তকে মাইক্রোফোনে ঘোষণা করতে হয়। তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কারণ গ্যালারি থেকে একবারও দেখা যায়নি মেসিকে।

১১.৫২ মিনিটে আচমকা মেসিকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মোটা টাকায় টিকিট কিনে মাঠে এসেও মেসিকে দেখতে না পাওয়ায় ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। 

শুরু হয় গ্যালারিতে লাগানো হোর্ডিং ভাঙচুর। পরে গ্যালারির চেয়ার ভেঙে মাঠে ছুড়তে শুরু করেন ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা। মাঠে পড়তে শুরু করে বোতল। এক সময় মাঠের ধারে ফেন্সিংয়ের গেট ভেঙে হুড়মুর করে মাঠে ভক্ত-সমর্থকরা ঢুকতে শুরু করেন। 

প্রথমে পুলিশ ছিল দিশেহারা। কিছুক্ষণ পর লাঠি উঁচিয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে তাড়া করে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ফুটবলপ্রেমীরা আবার মাঠে ফিরে আসেন।

এমন আয়োজনকে ‘চরম অপমান’ ও ‘পুরোপুরি অব্যবস্থাপনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ভক্তরা। শুরুতেই আয়োজন নিয়ে বিতর্ক, বাকি দুই দিনে মেসির আগমন ঘিরে উত্তেজনা কোন দিকে গড়ায়, সেটাই দেখার অপেক্ষা।

এর আগে ভারতীয় সময় রাত ২টা ২৬ মিনিটে কলকাতায় নামেন তারা। নজিরবিহীন নিরাপত্তা বেষ্টনিতে বিমানবন্দরের ১ নম্বর গেট থেকে তিনি বের হন ৩টা ২২মিনিটে।

বিমানবন্দর থেকে মেসি বের হওয়া মাত্রই সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়। তাকে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই বহু সমর্থক কলকাতা বিমানবন্দরের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। ভারত ও আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতেন তারা। সেই সঙ্গে পুরো শহরে উৎসব শুরু হয়, মেসি এক পলক দেখার জন্য।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত