আজ নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস 

  নাজমুল হুদা, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ |  আপডেট  : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৮

আজ (১৩ ডিসেম্বর) বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রামে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছিলো। জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হিলি হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। 

সেসময় তারা পাকসেনা ও রাজাকারদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। এরপর তারা নন্দীগ্রাম আসার পথে কাহালুর কড়ই বামুজা গ্রামে পাকহানাদারদের সাথে যুদ্ধ করেছে। সেই যুদ্ধে ১৮জন পাকসেনা নিহত হয়েছিলো। তারপর মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ৯ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে প্রবেশ করে ৩ দফা যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। প্রথমে ১১ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামের মন্ডলপুকুর সিএন্ডবি সড়কের পাশে থেকে পাকসেনা ও তাদের দোসরদের ওপর আক্রমণ করে। ওই দিন রণবাঘা বড় ব্রীজের নিকট রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়েছিলো। অপরদিকে বেলঘরিয়ায় পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে একজন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। 

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকসেনারা রাজাকারদের সহযোগীতায় চাকলমা গ্রামের আকরাম হোসেন, বাদলাশন গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ, রুস্তমপুর গ্রামের মহিউদ্দিন (মরু মন্ডল), ভাটরা গ্রামের আব্দুস সোবহান, হাটকড়ই গ্রামের ছমির উদ্দিন ও তার দুই পুত্র আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুর রশিদকে নির্মমভাবে হত্যা করে। সবচেয়ে বড় গণহত্যার ঘটনা ঘটে বামনগ্রামে। সেখানে ৯জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে গণকরব দেয় তারা। এছাড়াও আরো অনেক হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রাম থানা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ২০০ পাকসেনা রাজাকারদের সাথে লড়াই করে। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকার আটকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিলো। নন্দীগ্রামে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা ঘটে ডাকনীতলায়। সেখানে পাকসেনা রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন মরণ যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ৭১ এর ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদার ও রাজাকারদের হটিয়ে নন্দীগ্রামকে হানাদারমুক্ত করে মহান স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হন। ১৩ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা ইউনিট কমান্ড বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে আসছে। 

 

গ্রামনগরবার্তা/কা/আ

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত