অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে, সালিশে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা
চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
প্রকাশ: ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৩:০৩ | আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:১৪
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় চৌদ্দ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা মীমাংসার জন্য গত শুক্রবার রাতে সালিশ বৈঠক ডাকে। সেখানে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনায় মেয়ের বাবা মারা যান। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড হাটহাজারী থানার সন্দ্বীপ কলোনিতে।
থানা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ছাত্রী গত ২৭ জুলাই বিদ্যালয় থেকে সন্দ্বীপ কলোনির বাসায় ফিরছিল। পথে জোর করে তাকে তুলে নিয়ে যায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরের যুবক রিফাত [২২]। সে পেশায় নির্মাণশ্রমিক। তার খালার বাড়ি সন্দ্বীপ কলোনিতে।
ঘটনার সময় তার সহযোগী হিসেবে ছিল জাহিদ, বাদল, রিপন ও আবদুর রহমান। মেয়েটিকে নিয়ে বিয়ের রেজিস্টারে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। এদিকে মেয়েকে না পেয়ে পরিবার ওই দিন ২৭ জুলাই হাটহাজারী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি [জিডি] করে। পরদিন হাটহাজারী থানা পুলিশ নোয়াখালীর সুবর্ণচর থানা এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার রাতে মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষ আমতলী সন্দ্বীপ কলোনিতে সালিশ বৈঠকে বসে। এলাকার মাতবররা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় ছেলে ও মেয়েপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে মেয়ের বাবা ঘটনাস্থলে অচেতন হয়ে পড়ে পড়েন। তাকে চৌধুরীহাট ম্যাক্স কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ প্রসঙ্গে রবিবার [৩ আগস্ট] সকালে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার [হাটহাজারী সার্কেল] কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘এ ঘটনায় শনিবার [২ আগস্ট] রাতে হাটহাজারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ছেলে আরমান হোসেন বাদী হয়ে চার জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’
তিনি বলেন, ‘নিহতের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
এ বিষয়ে হাটহাজারী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরান জানান, আমতলী সন্দ্বীপ কলোনিতে সালিশ বৈঠকে মারামারি হয়। মারামারিতে একজন মারা যান। পুলিশ গিয়ে লাশের সুরতহাল তৈরি করেছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা [ওসি] আবু মাহমুদ কাউসার হোসেন বলেন, সালিশে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত