পুলিশের প্রতিবেদন

২৫ দিনে ৩৭৬ অগ্নিসংযোগ ও ৩১০ স্থানে ভাঙচুর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:৫২ |  আপডেট  : ৩ মে ২০২৪, ২১:১৮

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ২৫ দিনে বিএনপির মহাসমাবেশ পরবর্তী হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে ৩১০ স্থানে ভাঙচুর ও ৩৭৬ জায়গায় অগ্নিসংযোগের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। এ সময় বিভিন্ন ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশব্যাপী অবরোধ ও হরতালে গত ২৮ অক্টোবর হতে ২২ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ২৭৫টি যানবাহন, ২৪টি স্থাপনা ও ১১টি অন্যান্যসহ মোট ৩১০টি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২৯০টি যানবাহন, ১৭টি স্থাপনা এবং ৬৯টি অন্যান্যসহ মোট ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলায় আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর, ৫ নভেম্বর পিরোজপুর এবং ৬ ও ১৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের দুইটি অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ১৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন বরমী ইউনিয়নের ১৩২ নম্বর গিলাশ্বর মরহুম আ. জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের তৈরি স্কুল ঘরেও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ওই আগুনে বিদ্যালয়টির ৪টি বেঞ্চ ও একটি টিনের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অবরোধ চলাকালে ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত রেলওয়েতে ২৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে তিনটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা মহানগরে একটি, ময়মনসিংহে দুইটি, গাজীপুরে একটি, নেত্রকোণায় একটি এবং নওগাঁয় একটিসহ ৬টি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া কিশোরগঞ্জে একটি, নোয়াখালীতে দুইটি, সিলেটে একটি, পাবনায় একটি, দিনাজপুরে একটি ও গাজীপুরে তিনটিসহ রেললাইনে ৯টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

সিলেট, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে রেললাইন কেটে ফেলার চেষ্টাও করেছে দুর্বৃত্তরা। তারা গাইবান্ধায় রেললাইনের ফিস প্লেট খোলার চেষ্টা চালিয়েছে। পাবনায় ঘটেছে ট্রেনে পেট্রোল ও ডিজেল ভর্তি বোতল নিক্ষেপের ঘটনা। নারায়ণগঞ্জে রেললাইনের উপরে অতিরিক্ত ৩ ফুট লম্বা ৩ ইঞ্চি চওড়া পাত সংযোজন করে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছে।

গত ২৮ অক্টোবর হতে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৯ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে রমনায় দুই জন, বংশালে দুই জন, মুগদায় চার জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে দুই জন, মোহাম্মদপুরে এক জন, পল্লবীতে ৮ জন, কাফরুলে এক জন, গুলশানে পাঁচ জন ক্যান্টনমেন্টে এক জন, খিলক্ষেতে দুই জন ও উত্তরা পূর্বে এক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অপরদিকে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় অবরোধ ও হরতালের সময় পিকেটিং ও অগ্নিসংযোগ করাকালে ৬টি ঘটনায় হাতেনাতে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এক জন ও পিকেটিং করাকালে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অনেকেই নিজেদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশকে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে নাশকতাকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘PRESS’ লেখা জ্যাকেট পরে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, যা জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট। এ অবস্থায় ভাঙচুর ও নাশকতামূলক হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ পুলিশ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অবরোধ-হরতালে পরিবহন বা স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগকারীদের উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া গোপন রাখা হবে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত