হাসপাতালে কর্মচারীদের নির্যাতনে করোনা রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ 

  সিরাজদিথান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২১, ০৮:৪০ |  আপডেট  : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৫৩

রাজধানীর উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালে কর্মচারীদের মারধরে করোনা রোগী সবুজ পিরিজ(৩২)মারা গেছেন। সবুজ পিরিচ মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর গ্রামের মৃত সেন্টেু পিরিচের ছেলে। এঘটনায় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণপিটুনিতে তার  দেবরের ছেলেকে  মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের চাচী ভারতী পিরিচ। 

সবুজ পিরিচের পরিবারের অভিযোগ কয়েকজন চিকিৎসাকর্মী আহত হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসাধীন রোগীকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে রোগীর এক হাতের হাড় ভেঙে যায়। অপর হাতেরও কনুইয়ের জয়েন্ট ক্ষতি গ্রস্থ হয়। এছাড়া তার শরীরে অসংখ্যা কিল ঘুসি ও এলোপাতাড়ি ঠোসার আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। এভাবে পেটানোর পর তাকে আইসিইউ থেকে বের করে দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় সবুজ হাসপাতালের বারান্দায় পড়েছিলেন। পরে নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় রোগীকে  ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যায় তার পরিবার। উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালে কর্মচারীদের মারধরে করোনা রোগী সবুজ পিরিজ(৩২)চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার রাতে মারা গেছেন। 

সবুজ পিরিসের শ্বশুর জ্যোতি কস্তা সাংবাদিকদেরকে বলেন, গত ১৮ জুলাই তার এক মাত্র মেয়ের জামাই সবুজ পিরিচের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ জন্য তারা রাত তিনটায় ঢাকা উত্তরা শিনশিন হাসপাতালে যান। দ্রুততম সময়ে রোগীকে আইসিইউতে নিতে হবে বলে জানানো হয়। এক পর্যায়ে চিকিৎসক জানান, রোগীকে বাঁচাতে হলে  এখখুনি ৮০ হাজার ৮শত টাকা দামের একটি ইঞ্জেকশনও দিতে। আইসিইউতে ভর্তি অবস্থায় ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরপরই রোগী বিরুপ আচরণ শুরু করে। 

এ ছাড়া প্রতিদিনের জন্য ওষুধের খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকার বিল দেওয়া হয়। শুরু থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পরীক্ষা চিকিৎসার নামে সকালে বিকালে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয় । করোনা রোগী বলে রোগীর সাথে দেখা করতে দিতেন না। তিনি আরোও বলেন,উত্তরা শিশিন হাসপাতালে কর্মচারীদের অমানুসিক নির্যাতনে আমার একমাত্র মেয়ের জামাই মারা গেছেন আমি এর সুষুঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই। কি হচ্ছে  উত্তরা শিশিন হাসপাতালে প্রশাসনের প্রতি জোর তদন্তের দাবি আমার। সাধারণত আইসিইউ একটি সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে বিবেচিত। সেখানে এ ধরনের ধারালো ছুরি থাকার কথা নয়।

 সিরাজদিখান শুলপুর সাধু যোসেফ গির্জার ফাদার লিন্টু বলেন, ঢাকা উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রোগী ছুরি নিয়ে নার্সদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক। সাধারণত রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করলেই আইসিইউ থেকে বের করে ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। তাছাড়া করোনা আক্রান্ত যাদের আইসিইউ প্রয়োজন হয় তারা সাধারণত জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকেন। তিনি কিভাবে ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে সক্ষম হলেন । হাসপাতালে কর্মচারীদের নির্যাতনে করোনা রোগী সবুজ পিরিচের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।


 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত