হামজার জোড়া গোলেও নেপালকে হারাতে পারল না বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক;
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৬ | আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০০:৪৭
গল্পটা হতে পারতো ভিন্ন। পাঁচ বছর পর নেপালের বিপক্ষে একটি জয়ের গল্প রচিত হতে পারতো। নায়ক হতে পারতেন দেশের ফুটবলের পোস্টারবয় হামজা চৌধুরী।
১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশকে জোড়া গোল করে লিড এনে দিলেন তিনি। তবে আবারও সেই চিরচেনা চিত্র। শেষ মুহূর্তের গোলে হতাশা সঙ্গী। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে অনন্ত তামাংয়ে গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যদের।
কাকতালীয়ভাবে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। এই ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামেই। এরপর কেটে গেছে পাঁচ বছর। বাংলাদেশ নেপাল মুখোমুখি হয়েছে পাঁচ বার। এর মধ্যে জয়ের দেখা মেলেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। আজ সেই ১৩ নভেম্বরে জয়ের খুব কাছে গিয়েও জয়টা অধরা রয়ে গেল!
প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া বাংলােদেশ দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই লিড নিলো দেশের ফুটবলের পোস্টার বয় হামজা চৌধুরীর জোড়া গোলে। এই ম্যাচ আরও স্মরণীয় হয়ে থাকবে জাতীয় দলে কিউবা মিচেলের অভিষেক দিয়ে। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে হামজার বদলি হিসেবে নামেন কিউবা মিচেল। সান্দারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা কিউবা এই মৌসুমে নাম লিখিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসে।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই ফাহিমের ক্রস ক্লিয়ার করতে চেষ্টা করনে সুমিত শ্রেষ্ঠা। কিন্তু বল আসে জামালের পায়ে। তার উঁচু করে বাড়ানো বলে দূরহ কোণ থেকে বাইসাইকেল কিকে দলকে সমতায় ফেরান দেশের ফুটবলের পোস্টার বয় হামজা চৌধুরী।
ম্যাচের নাটকীয়তা তখন মাত্র শুরু ৪৯ মিনিটে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। বক্সের ভেতর রাকিবকে ফাউল করে বসেন নেপালের ফুটবলার। পেনাল্টির বাশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি হামজা চৌধুরী।
৬২ মিনিটে ক্রসবারের বাধায় গোল বঞ্চিত হয় নেপাল। প্রায় জিরো ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দিনেশ হানজানের উঁচু করে নেওয়া শট ক্রবারে লেগে ফিরে যায়। এরপর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। দুই দলের একের পর এক আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। তবে গোলের দেখা মিলছিল না কোনো দলেরই। তবে নাটকীয়তা তখনও বাকি। যোগ করা সময়ের চার মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ব্যাকহিলে বল জালে জড়ান নেপালের ডিফেন্ডার অনন্ত তামাঙ।
এর আগে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল একেবারে ম্যাড়ম্যাড়ে। সাদা-মাটা বাংলাদেশের বিপক্ষে গোল করে ২৯ মিনিটে সুমিত শ্রেষ্ঠার গোলে লিড নেয় নেপাল। এরপর আড়মোড়া ভেঙে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। তবে প্রথমার্ধে এই চেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি।
ম্যাচের শুরুতেই কিছুটা উদাসীন মনে হয়েছিল লাল-সবুজ শিবিরকে। মাঝমাঠে দখল রাখলেও আক্রমণে ছিল ছন্দহীনতা। অথচ দশম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। জামালের তোলা উঁচু বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান দিক দিয়ে ক্রস করেছিলেন ফাহিম। গোলমুখে দাঁড়িয়ে থাকা সোহেল রানা জুনিয়র সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মাথা ছুঁইয়ে দিতে ব্যর্থ হন।
২৬ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন ফাহিম। বক্সে বল পেয়ে দ্বিধায় পড়েন নিজে শট নেবেন নাকি পাশ দেবেন রাকিবকে। শেষ পর্যন্ত তার নেওয়া দুর্বল শট ধরে ফেলেন নেপালের গোলরক্ষক কিরন কুমার লিম্বু।
এর তিন মিনিট পরই পাল্টা আক্রমণে আঘাত হানে নেপাল। বাম দিক থেকে সুমিত শ্রেষ্ঠার ব্যাক পাস পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে বল জালে পাঠান রোহিত চাঁদ। গোলের পর কিছুটা ছন্দ ফেরানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশ, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধে আর সমতা ফেরানো সম্ভব হয়নি।
৩৬ মিনিটে ফাহিমের সামনে আসে আরেকটি সুযোগ। উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়েও তার শট ঠেকিয়ে দেন নেপালের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার অনন্ত তামাঙ। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধ শেষ হয় হতাশায়, বাংলাদেশ ০-১ নেপাল। দ্বিতীয়ার্ধে হামজা আশার আলো দেখালেও ডিফেন্সের ব্যর্থতা হতাশায় ডুবালো আরও একবার।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত