হলিউডে ট্রাম্পের ‘চোখের মণি’ এই তিন তারকা
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪ | আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৩৭
‘ব্রেভহার্ট (১৯৯৫)’, ‘মিডনাইট কাউবয় (১৯৬৯)’, ‘রকি (১৯৭৬)’ প্রভৃতি জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে মেল গিবসন, জন ভইট ও সিলভেস্টার স্ট্যালোনকে দেখেছেন দর্শক। এবার হলিউডে এই তিন তারকার দেখা মিলবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের চোখের মণি তথা বিশেষ দূত হিসেবে। সম্প্রতি এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই।
এ বিষয়ে ক’দিন আগে ট্রুথ সোশ্যাল’র এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন যে, হলিউডের মতো গুরুতর জায়গায় তাঁর ‘চোখ-কান’ হিসেবে কাজ করবেন ভইট, গিবসন ও স্ট্যালোন।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘জন ভইট, মেল গিবসন ও সিলভেস্টার স্ট্যালোনকে ক্যালিফোর্নিয়া, হলিউডের মতো একটি গুরুতর, কিন্তু সমস্যা জর্জরিত জায়গায় বিশেষ দূত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া আমার জন্য সম্মানের।’
যোগ করে বলেন, ‘হলিউডকে ফেরাবার উদ্দেশে তারা আমার বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করবে, যেটি গত চার বছরে বিদেশে অনেক ব্যবসা হারিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই তিনজন মহা প্রতিভাবান মানুষ আমার চোখের মণি হবে এবং তারা যা পরামর্শ দেবে, আমি তাই করব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো আবারও হলিউডের স্বর্ণযুগ!’তবে গিবসন, স্ট্যালোন ও ভইট হলিউডে বিশেষভাবে কী ভূমিকা রাখবেন—এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নও উঠছে।
ফক্স নিউজ ডিজিটালকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ক্যালিফোর্নিয়ার চ্যাপম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ট্রাভিস নক্স বলেন, ‘‘বিশেষ দূতদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব এই মুহূর্তে স্পষ্ট নয়। পলায়নপর প্রযোজনা বন্ধ করা কিংবা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র বাজার চীনকে বোঝানো, আমদানিকৃত হলিউড চলচ্চিত্রের কোটা প্রসারিত করা আমেরিকান চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি বিজয় হবে। যাইহোক, স্পষ্ট নির্দেশনা ছাড়া, হলিউডে ট্রাম্পের ‘চোখের মণি’ হিসেবে ভইট, গিবসন ও স্ট্যালোনের ভূমিকার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’’
মেরিল্যান্ডের লয়োলা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক নির্বাহী ও ডন’স লাইট মিডিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেসন চিরুবিনি বলেন, ‘এটা এমন কিছু নয় যে তারা অফিসিয়াল সরকারি কর্মচারী বা তাদের নির্দিষ্ট ক্ষমতা আছে। আমি মনে করি, হলিউড ও বর্তমান প্রশাসনের আরও রক্ষণশীল বা ডানপন্থীর মধ্যে একটি সহযোগিতা ফিরিয়ে আনার প্রতীকী চেষ্টার ধারণা এটি।’
কেন এই তিনজনকে বেছে নেওয়া
মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, মেল গিবসন, জন ভইট ও সিলভেস্টার স্ট্যালোন প্রত্যেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ২০১৯ সালে ভইটকে ‘ন্যাশনাল মেডেল অব আর্টস’ পদক দেন ট্রাম্প। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে সমর্থন দিয়ে আসছেন অভিনেতা।
এদিকে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমেরিকার ‘সেকেন্ড ওয়াশিংটন’ হিসেবে অভিহিত করেন স্ট্যালোন।গিবসন অতীতে বর্ণবাদী এবং ইহুদি বিদ্বেষী মন্তব্য করার জন্য বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন। অবশ্য সেজন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় কমলা হ্যারিসের বুদ্ধিমত্তা নিয়েও উপহাস করেন তিনি।
হলিউডে যে ধরনের সমস্যা বিদ্যমান
সাম্প্রতিক বছরে করোনা মহামারি, রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকার ধর্মঘট এবং সর্বশেষ দাবানলের কারণে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে হলিউড। তবে মূল সমস্যা অন্যত্র। আমেরিকান বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বসের মতে, ভালো কর প্রণোদনা ও খরচ কম হওয়ায় কয়েক বছর ধরে টিভি ও চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণ দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে অন্য রাজ্য এবং দেশে সরে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ইংল্যান্ড, হাঙ্গেরি, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার স্টুডিওগুলো আরও ভালো ট্যাক্স ইনসেনটিভ দিয়ে থাকে।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে আরেকটি গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে হলিউড, তা হলো আন্তর্জাতিক টিকিট বিক্রি মারাত্মকভাবে কমে যাওয়া। যেমন, আমেরিকান চলচ্চিত্রের জন্য চীন একটি বড় বাজার ছিল, কিন্তু সম্প্রতি স্থানীয় চলচ্চিত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে দেশটি। সূত্র: ফক্স নিউজ ডিজিটাল, ইয়াহু!নিউজ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত