স্বামীর পরকিয়ায় বাঁধা, অবশেষে প্রাণ গেল গৃহবধূর

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১৮:০৪ |  আপডেট  : ৩ মে ২০২৪, ০৮:১৫

স্বামীর পরকীয়ার বাঁধা দেয়াই যেন কাল হয়ে দাড়ালো মাদারীপুর সদর উপজেলার করদী গ্রামের মেয়ে শান্তা আক্তারের। কৌশলে পানীয় জাতীয় কোল্ড ডিকিংসের সাথে ঘামমারা ওষুধ খাওয়ানোর ৭ দিন পর মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মারা গেলো শান্তা। সোমবার বেলা ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকে পালিয়েছে অভিযুক্ত স্বামী। আর থানা পুলিশ বলছে, ঘটনা তদন্ত করে দোষীকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা করছেন। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গেলো ৩ বছর আগে কালকিনির সনমান্দি গ্রামের আক্কাস হাওলাদারের ছেলে সাইফুল হাওলাদারের সাথে বিয়ে হয় ঘটমাঝি ইউনিয়নের করদী গ্রামের হাবিবুর খানের মেয়ে শান্তা আক্তারের। বছর দেড় পরেই তাদের কোলে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। 

সম্প্রতি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন স্বামী সাইফুল। এতে বাঁধা হয়ে দাড়ান শান্তা। এরপরেও টেনেটুনে চলছিল তাদের দাম্পত্ত জীবন। তার স্বামী কৌশলে গেলো ২০ আগস্ট রবিবার সকাল ১০টায় ঘুরতে নিয়ে যায় আড়িয়াল খাঁ সেতুর পাশে কলাবাগানে। সেখানে তিনি কৌশলে কোকের সাথে ঘাসমারা ওষুধ খাইয়ে দেন শান্তাকে। এক পর্যায়ে বিষক্রিয়া বুঝতে পেলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকেন শান্তা। পরে স্থানীয়রা দেখে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

শান্তার মান শেফালী বেগম বলেন, ‘ঘটনার দিনই শান্তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সেই রাতেই ফরিদপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান দু’দিন চিকিৎসা করানোর পর বাড়ীতে আনা হয়। পরে বাড়ীতেও প্রচুর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে পুনরায় সদর হাসপাতালে গেলো ২৪ আগস্ট ভর্তি করা হয়। সেখানে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু আর বাড়ী নেয়া হলো না আমার মেয়েকে। সোমবার বেলা ৩টায় মারা গেলো।’

বিষয়টি প্রথমে জানাজানি না হলেও এক পর্যায়ে অসহায় শান্তা গণমাধ্যমে আসে। হাসপাতালে খোঁজ নেন পুলিশও। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, একটা অভিযোগ দেয়া আছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ওই মেয়ের স্বামীও নাকি পরের দিন বিষ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এখন পুরো বিষয় তদন্ত করলেই সঠিক রহস্য বের হয়ে আসবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও শান্তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারীদের শ্লীলতাহানীর অভিযোগ রয়েছে। তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে শান্তাই সংসার করে আসছিলো। শান্তার মা ও তিন বোন থাকায়, বাপের বাড়ী লোকজন অসহায়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত