অযথা ব্যয় ৫ কোটি ৬৪ লাখ
সিলেট নগরীতে কাজে লাগছে না ফুটওভার ব্রিজ !!
![](https://gramnagarbarta.com/assets/images/reporter.png)
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৭ | আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:৩৮
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/67ac93bc0ee73.jpg)
সিলেট নগরীতে নির্মিত ৫ কোটি ৬৪ লাখা ব্যয়ে নির্মিত ফুটওভার ব্রিজ লাগছে না কোন কাজে। ফুটওভার ব্রিজের ওপরে বাসা বেধেছে কুকুর ও টুকাইরা। দিন রাত চলে নেশা, এক শ্রেণীর নেশাকারী ও ছিনাতাইকারীরা নিরাপদ রোড হিসেবে ব্যবহার কাছে। নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় ছিনতাইকারী ও পকেট চোরেরা অপকর্ম করে দ্রুত রাস্তার ওই পাশ থেকে অন্যপাশে নিরাপদে ফুট ওভার দিয়ে। এত টাকা ব্যয় করে ব্রিজ পথচারীরা ব্যবহার না করায় কোটি কোটি টাকার চার ফুটওভার ব্রিজ এখন এক প্রকার পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শুধু তাই নয় এসব ব্রিজ এখন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা মালামাল রাখার জায়গায় পরিণত করে রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে, উক্ত প্রকল্প গ্রহণে দুরদর্শিতার অভাব আর সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে যাতায়াতের প্রয়োজন অনুভব করছেন না জনসাধারণ। শুধু-শুধু টাকার অপচয় ছাড়া আর কোন সুফল জনসাধারণ ভোগ করতে পারেন নি। ফুট ওভারব্রিজ স্থাপনের কিছুদিন পর থেকেই এসবের উপকারিতা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা ও সমালোচনা।
সিসিক প্রকৌশল বিভাগ জানায়, আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের আগ্রহে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্টে ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এরপর প্রায় ৯ বছর অতিবাহিত হলেও ব্রিজ দিয়ে চলাচলে জনসাধারণের কোন আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি।
২০২১ সালে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে টিলাগড়ে নির্মাণ করা হয় আরেকটি ফুট ওভারব্রিজ। ২০২২ সালে কদমতলীর হুমায়ুন রশীদ চত্বরের পাশে নির্মিত হয় আরেকটি ব্রিজ। এটিও জনসাধারণের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারেনি। এ অবস্থায় ২০২৩ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালিন ভিসির আবেদনের প্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদ রাস্তা পারাপারের কথা চিন্তা করে শাবি গেইটে নির্মাণ করা হয় ফুট ওভারব্রিজ।
সিসিক'র প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানান, কোর্ট পয়েন্টে ওভার ব্রিজ ছাড়াও আরও তিনটি ওভারব্রিজ নির্মিত হয়। এই তিনটি ব্রিজে ব্যয় হয় ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এগুলোর ব্যয়ের আলাদা আলাদা কোন হিসেব তিনি দিতে পারেননি। তাছাড়া ৪টি ওভারব্রিজ পরিচর্যা ও সংস্কারের কোন ব্যয় নেই। বন্দর ওভার ব্রিজের নিচে কথা হয় সিসিকের শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অনিল কুমার মজুমদারের সাথে। একজন পথচারী হিসাবে তিনি বলেন, সচেতন নাগরিক সমাজ গঠন না করে এসব প্রকল্প থেকে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন না হওয়াই স্বাভাবিক। তাছাড়া এমন হতে পারে ওভার ব্রিজগুলোতে প্রকৌশলগত গঠন পদ্ধতি বিশেষ করে বৃদ্ধ, মহিলা, কিংবা শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুবিধা না রাখায় ব্রিজ দিয়ে চলাচলে আগ্রহ নেই। তবে যেটুকু হয়েছে এর সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন, আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া।
এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যেতে পারে। অনেকাংশে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পারাপারের জন্য বেশি সময় হয় বলে অনেক নাগরিক তা ব্যবহার করেন না। বন্দর ফুট ওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে জনসাধারণ পারাপারে বিধি নিষেধের ব্যবস্থা করে সচেতনতা গড়ে তুলা যেতে পারে।
অনন্য ওভার ব্রিজগুলোর সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বলেন সব গুলোই প্রয়োজন বোধ করে তৈরি করা হলেও এক্ষেত্রে উপযোগীতার ব্যাপারে আরো যাচাই করে এই ব্রিজগুলো তৈরি করলে হয়তো ব্যাপারটা অন্যরকম হতো। সরেজমিনে নগরীর চারটি অভারব্রিজ ঘুওে দেখা যায়, রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে পথচারীরা সেগুলো ব্যবহার করছেন না। রাস্তা পার হওয়া পথচারীদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে অনেকেই এড়িয়ে গেছেন। কেউ বলেন এগুলোর দরকার নেই, কেউ বলেছেন এগুলো হর্তাকর্তাদের পকেট ভারি করার প্রকল্প।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত