সান্তাহার ২০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ হলেও নেই কেউ

  আদমদীঘি(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২২, ১৯:৩৮ |  আপডেট  : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫৬

উদ্বোধনের প্রায় ১৬ বছর পর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ২০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করার উদ্যেগ গ্রহন করেছে কর্তৃপক্ষ । শেষ হয়েছে হাসপাতালের অসমাপ্ত নির্মাণ কাজ । নিয়োগ দেয়া হয়েছে চিকিৎসক,সেবিকাসহ বিভিন্ন শ্রেনীর কর্মচারি । কিন্তু কাগজে কলমে ২৩ জনকে নিয়োগ দেখানো হলেও বর্তমানে হাসপাতালটিতে কোন চিকিৎসক বা সেবীকাকে কর্মরত পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে হাসপাতালে চিকিৎসক সহ নয়জন কর্মরত থেকে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসলেও সরেজমিন তাঁদের কোন খোঁজ মেলেনি ।

আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে এই হাসপাতালের জন্য চার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার এবং স্টাফ নার্সসহ ২৩ জনবল দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের জন্য মঞ্জুরি করা পদগুলোর মধ্যে রয়েছে, জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী, জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনী, জুনিয়র কনসালটেন্ট এনেসথিয়া, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার এবং মেডিক্যাল অফিসার। পাঁচ স্টাফ নার্স, এক মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান (ল্যাব), এক ফার্মাসিস্ট এবং এক প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক। এছাড়া দুই ওয়ার্ডবয়, এক ল্যাব সহকারি, এক অফিস সহায়ক, এক কুক/মশালচি, এক দারোয়ান, এক এমএলএসএস এবং এক সুইপার। মঞ্জুর করা ২৩ জনের মধ্যে ১৪টি শুন্য পদ শুন্য রয়েছে । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবল তালিকায় বর্তমানে  হাসপাতালে একজন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও পাঁচ স্টাফ নার্সকে কর্মরত দেখানো রয়েছে । কিন্তু রোববার সরেজমিন সান্তাহার হাসপাতালে গিয়ে প্রধান ফটক সহ সকল দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায় । স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসক ও নার্সরা কেউ হাসপাতালে আসেন না । হাসপাতালে এখনো শুরু হয়নি চিকিৎসা কার্যক্রম। সান্তাহার হাসপাতালে কর্মরত দেখিয়ে তাঁরা বেতন-ভাতা উত্তোলন করছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার পৌরসভার অর্ধলক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০০৪ সালে শহরের রথবাড়ি এলাকায় ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মান কাজ শুরু করা হয়। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ সময়ে অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন বিএনপি দলীয় সাংসদ আব্দুল মোমেন তালুকদার। হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ না করেই সমুদয় বিল তুলে নিয়ে উধাও হয়ে যায় নির্মাণ ঠিকাদার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বোনের ছেলে শাওরিন ইসলাম। এরপর ১৪ বছর ধরে হাসপাতালটি থাকে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায়। বর্তমান সরকারের সময় ২০১৯ সালে পুনরায় হাসপাতালের নির্মান কাজ শুরু হয় । স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালে ২৩ লোকবল নিয়োগ দেয় । 

বিষয়টি নিয়ে রোববার বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. শফিউল আজমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি  জানান, হাসপাতালে বর্হিবিভাগ চালু করা হয়েছে । কেন সেটি তালাবদ্ধ ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন,হাসপাতালে বর্তমানে নয়জন কর্মরত রয়েছেন । চলতি মাসের ২৮ তারিখে প্রায় ৪৮ জন নতুন চিকিৎসক নিয়োগ পাবে। এ সব চিকিৎসক যোগদানের পর হাসপাতালের কার্যক্রম ভাল ভাবে চালু করা সম্ভব হবে । এ ছাড়া হাসপাতালে জন্য বরাদ্দ হওয়া ফার্নিচার বগুড়া এসে পৌছেছে । সে গুলো দ্রুত সেখানে পাঠানো হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত