সর্বাত্মক লকডাউনে কী অবস্থা রাজধানীর সড়কের
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২১, ১১:৫৮ | আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:৫২
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। এ ৯ দিনে জনগণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে রাজপথে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
তবে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধে দেখা যাচ্ছে গত সপ্তাহের বিপরীত চিত্র। বুধবার সকাল থেকেই সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।
রাজধানীর সড়কে খুব কম মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কে দেখা যায়নি গণপরিবহন। চলছে অল্প কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন। গতবার সড়কে চোখে পড়ার মতো রিকশা চলাচল করতে দেখা গেলেও এবারের চিত্র ভিন্ন।
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই ঘরের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
সরেজমিন: সাভার থেকে বাড্ডা
সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ঢাকায় প্রবেশের পথে নিউজবাংলার স্টিকারযুক্ত প্রাইভেটকারটি প্রথম পুলিশি জিজ্ঞাসার মুখে পড়ে ঢাকার অন্যতম প্রবেশপথ গাবতলী ব্রিজ এলাকায়।
সকাল সাতটার দিকে সেখানে মুভমেন্ট পাস দেখে গাড়ি ছাড়ায় ব্যস্ত দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। ওই এলাকায় জরুরি পণ্য কিংবা জরুরি সেবার যানবাহন ছাড়া অন্য যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। প্রথম রোজা ও বাংলা নববর্ষের দিনটিতে সড়কে মানুষের চলাচলও ছিল খুব কম।
গাবতলীর পর মাজার রোড এলাকায়ও চেক পোস্ট বসিয়ে মুভমেন্ট পাস চেক করতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। সেখানে গাড়িতে স্টিকার থাকার পরও প্রতিবেদকের কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চান পুলিশ সদস্যরা। পরিচয়পত্র দেখে ছেড়ে দেয়া হয় গাড়ি।
মাজার রোড পেরিয়ে টেকনিক্যাল মোড় থেকে বামে মিরপুর-১ নম্বরের দিকে যেতে পুলিশের ব্যারিকেড দেখা যায় পাইকপাড়া এলাকায়। এক পাশে রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়ি ঘুরিয়ে উল্টা পথে মিরপুরের দিকে যেতে হয় নিউজবাংলাসহ অন্য গাড়ির চালকের।
মিরপুর-১ নম্বর থেকে ১০ নম্বরের দিকে যেতেও সড়কে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। সড়কে গাড়ি ও মানুষের সংখ্যা ছিল কম।
মিরপুর-১০ থেকে ১৪ নম্বর হয়ে ক্যান্টনমেন্ট দিয়ে বের হওয়ার সময় সেনা সদস্যদের তল্লাশির মুখে পড়ে নিউজবাংলার গাড়িসহ ব্যক্তিগত কিছু গাড়ি। নির্দেশনা মেনে গাড়ি চালানো হচ্ছে নিশ্চিত হয়েই দেয়া হয় সেনানিবাস দিয়ে চলাচলের অনুমতি।
সেনানিবাস এলাকা থেকে বেরিয়ে কাকলী হয়ে ইউটার্ন নেয়ার আগে নৌবাহিনী সদর দপ্তর এলাকা দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলোর চালকদের কাছে চলাচলের পাস দেখতে চায় পুলিশ। সেখানে পরিচয়পত্র দেখে অনুমতি দেয়া হয় চলাচলের।
ইউটার্ন নিয়ে মহাখালীর আমতলী এলাকায় পৌঁছানোর আগে গাড়িতে থাকা নিউজবাংলা প্রতিবেদকের কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। পরিচয়পত্র ভালোভাবে দেখে গাড়ি ছেড়ে দেন তিনি।
পরে আমতলী হয়ে গুলশান-১ মোড়ে পৌঁছানোর আগে লেকের পারে দেখা যায় পুলিশের ব্যারিকেড। সেখানেও পরিচয়পত্র বা মুভমেন্ট পাস দেখে গাড়িগুলোকে চলাচলের অনুমতি দেয় পুলিশ।
আমতলী থেকে গুলশান-১ মোড় পর্যন্ত সড়কে অল্প কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি দেখা যায়। তবে চোখে পড়েনি কোনো রিকশা।
গুলশান মোড় থেকে হাতিরঝিল হয়ে বাড্ডায় নিউজবাংলার কার্যালয়ে পৌঁছানোর আগে রাস্তায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখা যায়। বাকি গাড়িগুলোর মধ্যে ছিল প্রাইভেটকার ও পিকআপভ্যান।
হাতিরঝিল থেকে বাড্ডা লিংক রোডমুখী সড়কে বৌদ্ধ মন্দিরের বিপরীতে দেখা যায় পুলিশি ব্যারিকেড। সেখানে মাস্ক না পরায় পুলিশের কড়া জেরার মুখে পড়তে হয় এক মোটরসাইকেল আরোহীকে।
দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে গত ৫ এপ্রিল থেকে সাধারণের চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করে সরকার। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্প কারখানা ও গণপরিবহন চালু থাকায় এ বিধিনিষেধ করোনা নিয়ন্ত্রণে খুব একটা কাজে আসেনি।
এর মধ্যে বুধবার থেকে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ বিধিনিষেধ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত