শোকের মাতমে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৯ আগস্ট ২০২২, ১২:০৩ |  আপডেট  : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩০

করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসায় দুই বছর বিরতির পর আবারও রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে এ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি আজিমপুর-নিউমার্কেট হয়ে ধানমন্ডির ঝিগাতলায় গিয়ে শেষ হবে। সেখানে ধানমন্ডি লেকের পাশে নামাজ আদায় ও দোয়া পাঠ করবেন অংশগ্রহণকারীরা।

তাজিয়া মিছিল শুরুর আগে মহড়া দিয়েছে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। এছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশিবাজার, লালবাগ, পল্টন, মগবাজার থেকেও আশুরার মিছিল বের হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। 

মিছিলের মূল আয়োজক হোসেনি দালান ইমামবাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটি। মিছিলকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যে কোনও প্রকার নাশকতা ঠেকাতে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদস্যরা। সঙ্গে রয়েছেন র‌্যাব ও বিভিন্ন স্তরে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

হোসেনি দালান ইমামবাড়ার তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী দা, ছুড়ি, কাঁচি, বল্লমসহ সবধরনের ধাতব অস্ত্র যেগুলো ক্ষতি সাধন করতে পারে; সেগুলো মিছিলে না নিয়ে আসার অনুরোধ করেছি আমরা। আমরা সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেছি, যেন মিছিলের পবিত্রতা রক্ষা করা হয়।’

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন ইবনে আলী (রা.) হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম কারবালার ফোরাত নদীর তীরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেন। এই শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিমরা আশুরাকে ত্যাগ ও শোকের দিন হিসেবে পালন করেন।

দেশে শিয়া সম্প্রদায় মহরম মাসের প্রথম দশদিন শোক স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করে। আশুরার দিনে তাজিয়া বের করা হয় শোকের আবহে। মূলত ইমাম হোসেন (রা.) এর সমাধির প্রতিকৃতি নিয়ে এই মিছিল হয়। আরবি ‘তাজিয়া’ শব্দটি শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করতে ব্যবহার করা হয়।

তাজিয়া মিছিলে দেখা যায় কারবালার ঘটনার শোকাবহ দৃশ্যায়ন। কালো জামা পরিধান করে মিছিলে বুক চাপড়ে, মাতম করে শোক প্রকাশ করেন শিয়ারা। আর অংশগ্রহণকারীরা ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ করে সমবেত কণ্ঠে গাইছেন শোকের গান। মিছিলে একটি দল বাঁশের লাঠির আগায় নানা রকম পতাকা বহন করছেন। সম্মুখভাগেই বহন করা হচ্ছে ইমাম হোসেনের সমাধির আদলে প্রতীকী সমাধি। অনেকেই কবুতর, মুরগি, হাঁস সেখানে দান করছেন।

মিছিলে দুইটি ঘোড়াও রয়েছে। এরমধ্যে একটি ঘোড়ার পা দুধ দিয়ে ধুয়ে দিয়েছেন ভক্তরা। আবার ঘোড়ার পায়ে দেওয়া দুধ অনেকেই নানা নিয়তে পান করছেন, কেউ বা শরীরে মাখছেন।

শুধু মিছিলে অংশ নিতে নয়, মিছিল দেখতেও এসেছেন অনেকে। বাসা-বাড়ির বারান্দায় ও রাস্তার দুই পাশে ছিল হাজারও মানুষের উপস্থিতি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত