শুটকি আহরণ মৌসুম শুরু, সমুদ্রে হাজারো জেলের যাত্রা
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৮:২৬ | আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:৪১
শীতের শুরুতেই সুন্দরবন উপকূলীয় দুবলার চরে শুটকি আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সুন্দরবন বন বিভাগের কাছ থেকে পারমিট নিয়ে জেলেরা সাগরে যাত্রা শুরু করেছে। প্রতিবছর এই শুটকি মৌসুমে প্রায় পনের হাজার জেলে সুন্দরবনের বিভিন্ন চরে অবস্থান নেয়। ৫ মাস ধরে চলে সমুদ্রে মতস্য আহরণ ও চরগুলোতে শুটকি প্রক্রিয়াজাত কার্যক্রম। এবছর বন বিভাগ প্রায় তিন কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এবারের শুটকি মৌসুমে দুবলার চরে জেলেদের জন্য ৯৮৫টি ঘর ও ৬৬টি ডিপোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শুটকি মৌসুম ঘিরে সুন্দরবনের দুবলা চরাঞ্চলে অন্তত ১২ থেকে ১৩ হাজার জেলে-ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের সমাগম ঘটবে। বনের কোনো প্রকার ক্ষয়-ক্ষতি না হয় সে জন্য শুটকি আহরণের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ঘর তৈরির ক্ষেত্রে নানা শর্ত দিয়েছে বন বিভাগ।
বাগেরহাট, মোংলা, রামপাল, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশালসহ সুন্দরবন উপকূলের হাজার হাজার জেলে এখানে অবস্থান নেয়। এছাড়া চট্টগ্রাম, হাতিয়া, সন্দীপ ও রংপুর অঞ্চলের জেলে ও মৎস্যজীবীরাও আসেন দুবলার চরাঞ্চলে।
যেসব চর এলাকায় শুটকি প্রকৃয়াজাত হয় তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দুবলার চর, মেহের আলীর চর, আলোরকোল, অফিস কিল্লা, মাঝির কেল্লা, শেলার চর, নারকেল বাড়িয়া, ছোট আম বাড়িয়া, বড় আম বাড়িয়া, মানিক খালী, কবর খালী, চাপড়া খালীর চর, কোকিলমনি ও হলদি খালীর চর।
শরণখোলার জেলে ইউনুস, শাহ আলম, কামরুলসহ একাধিক জেলে জানান, বছরের ৫ মাস সমুদ্রে থেকে মাছ আহরণ করি। সেটা বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুটকি বানিয়ে বিক্রি করে জীবন যাপন করি। তারপরও মাছ ধরতে গেলে বিভিন্ন সময় দূর্যোগের মুখে পড়তে হয়। চরগুলোতে জেলেদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার দাবী জানান তারা।
মৎস্য জীবি সংগঠন দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক নিয়েই উপকূলীয় অঞ্চলের মৌসুমী জেলেরা জাল-নৌকা ও মৎস্য আহরণের উপকরণ নিয়ে সাগর পাড়ের জেলে পল্লীতে ছুটে যান। জেলেরা নিজেদের জীবনের ঝুকি নিয়ে মাছ আহরণ করেন। সেদিকে লক্ষ রেখে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাশাপাশি সুপেয় পানি ও চিকিতসা ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবী জানান জেলেদের এই নেতা।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সুন্দরবনের বিভিন্ন চরে শুটকি মৌসুমে জেলেদের পারমিট (অনুমতি) দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই জেলেরা মাছ আহরণে সমুদ্রে যাত্রা শুরু করেছে। তবে জেলেরা যাতে চরগুলোতে তাদের মাচা তৈরি ও ঘর নির্মাণে অবৈধ ভাবে সুন্দরবনের কোনো গাছ কর্তন না করে সে ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও এ মৌসুমে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে সব ধরণের অপরাধ ঠেকাতে বনবিভাগের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।##
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত