শিগগিরই রেশন কার্ড দেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২২, ১৪:২৫ |  আপডেট  : ২১ মার্চ ২০২৪, ২৩:১৯

বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় মানুষ যেন ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারে সেই লক্ষ্যে রেশন কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, ১ কোটি পরিবারকে এই কার্ড দেওয়া হবে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার সকালে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

বর্তমান সংকট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী যখন মন্দা, উচ্চমূল্য আমরা তো এর বাইরে যেতে পারি না। সেই ধাক্কা আমাদের ওপর এসে লাগছে। বাংলাদেশের ওপরও লাগছে। আমি তো বহু আগেই থেকে বলছি, ১ ইঞ্চি জমি খালি রাখবেন না। প্রত্যেকটা যুদ্ধের পরে দুর্ভিক্ষ হয় সারা বিশ্বে। কাজে এটা দেখতে হবে যে, আমাদের দেশে যেন কখনো খাদ্য ঘাটতি না হয়। আমরা ১ ইঞ্চি জমি ফেলে রাখবো না। আমাদের উৎপাদন আমরা বাড়াবো। নিজেদের খাদ্যের ব্যবস্থা আমরা নিজেরা করবো। আজকের বিশ্বের পরিস্থিতি আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। আমি জানি...আমরা তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। বিদ্যুৎ আমি শতভাগ দিয়েছিলাম। আজকে বিদ্যুৎ উৎপাদন আমাদের সীমিত করতে হয়েছে। কারণ আমার সার উৎপাদন করতে হবে। আমাদের দেশ গ্যাসে ভাসে সেটা তো না! আমরা সার্ভে অব্যাহত রেখেছি, কূপ খনন করছি। গ্যাসও যেটুকু পাচ্ছি ব্যবহার করছি। পাইপ লাইনে গ্যাস আনছি। যত রকমের যা করার আমরা কিন্তু করে যাচ্ছি। কোথাও আমরা পিছিয়ে নাই। আজকে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণেই তো আমাদের এই ধাক্কায় পড়তে হচ্ছে। তারপরও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আমার দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে এবং এই অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে আমরা ৩৫ লাখ মানুষকে চাল দেবো। আর আমরা একটা রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, সেটার ওপর কাজ চলছে। সেখানে চাল, ডাল, তেল, চিনি আমরা দেবো ৩০ টাকা কেজিতে এই রেশন কার্ড। ১ কোটি পরিবার এই রেশন কার্ড পাবে। যেখান থেকে ন্যায্য মূল্যে তারা পণ্য কিনতে পারবে। সেটার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। অচিরেই আমরা এটার ঘোষণা দিতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা কিন্তু ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি চাই না, আমার দেশের মানুষ কোনো রকম কষ্টে ভুগুক। খাদ্য বা অন্য কিছুর কষ্ট পাক। কারণ রাজনীতি করিই তো তাদের জন্য। জানি না, আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন বারবার হয়তো এ দেশের কল্যাণের জন্য, মানুষের জন্য। রাখে আল্লাহ মারে কে, মারে আল্লাহ রাখে কে; এটাই কথা। বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে যেয়ে আমি সামনা-সামনি হয় গুলি-না হয় বোমা, না-হয় গাড়ি আক্রমণের শিকার না হয়েছি। তারপরও বেঁচে আসছি। দেশের কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আমাদের দায়িত্ব জনগণের প্রতি আর সেই দায়িত্ব যতক্ষণ নিঃশ্বাস আছে, করে যাব। সেটাই আজকের প্রতিজ্ঞা। আজকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার ঝাপ্টা আমাদের দেশে লেগেছে, তা থেকে দেশের মানুষকে আমরা কীভাবে রক্ষা করবো সেটাই আমাদের চিন্তা। এ জন্য সবার সহযোগিতাও দরকার। শুধু সমালোচনা আর কথা বললেই তো আর হবে না! সবাইকে কাজও করতে হবে যেন এই ধাক্কা থেকে আমাদের দেশের মানুষ রেহাই পায়, বলেন শেখ হাসিনা।

এ সময় সবাইকে সাশ্রয়ী হতে আবারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, এই আঘাত হয়তো আরও সামনে আসবে। কারণ যখন আমার আব্বা দেশটাকে একবারে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখনই তো ১৫ আগস্ট ঘটেছে, আজকেও বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষকে আর শোষণ করা যাবে না যারা মনে করে বা স্বাধীনতার চেতনা জয় বাংলা ফিরে এসেছে, আবার জাতির পিতার নাম বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হচ্ছে, এগুলো যারা সহ্য করতে পারবে না তারা বসে থাকবে না। তারা আবার আঘাত করবে। বাংলাদেশকে আবার জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেষ্টা করবে। সে জন্য দেশবাসী আমি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত