শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠার ‘প্রতিবাদ করায়’ দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩২ |  আপডেট  : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:২০

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের [জবি] কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠার ‘প্রতিবাদ করায়’ নারীসহ দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার [২৯ জানুয়ারি] সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম ও আকাশ আলী আহত হয়। ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আহত শিক্ষার্থী আকাশ আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল [ঢামেক] হাসপাতালে নেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, হামলার নেতৃত্ব দেয় শাখা ছাত্রদলের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেতের অনুসারী। এসময় তার সঙ্গে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী হামলার ঘটনায় অংশ নেয়। তবে বাকিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তারা আরও জানান, জুতা পায়ে এক মেয়ে ও ছেলে শহীদ মিনারে উঠলে প্রতিবাদ করেন আকাশ। এরপর তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠা মেয়েটির বন্ধু মাহী আকাশকে ধাক্কা দিতে গেলে আকাশ তার হাত সরিয়ে দেয়। এসময় মাহী তার বিভাগের বন্ধু অনিককে ফোন দেয়। ফোন দেওয়ার দুই মিনিটের মাথায় অনিকের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী এসে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে আকাশের ওপর। এসময় আকাশের সঙ্গে থাকা এক মেয়ে শিক্ষার্থীর ওপরও আঘাত করে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আকাশ বলেন, আমরা বিভাগের প্রোগামের জন্য স্টেজের কাজ করছিলাম। বিদ্যুৎ চলে গেলে চা খাওয়ার জন্য নিচে আসি। তখন একজন নারী শিক্ষার্থী ও তার সঙ্গে থাকা একজন ছেলে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠে। তাদের এ বিষয়ে বললে মেয়েটি বলেন, আমার ইচ্ছা তাই জুতা পায়ে উঠেছি। একপর্যায়ে ছেলেটি আমার ওপর চড়াও হয়। এরপর ‘আমি তাকে আঘাত করেছি’, এটা বলে তার বন্ধু অনিককে ফোন দেয়। তখন অনিক এসে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। এরপর তার সঙ্গে থাকা প্রায় ১৫ জনের বেশি ছেলে এসে আমার ওপর হামলা করে। অনিকই আমার ওপর প্রথম হামলা শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, ‘তারা কয়েক দফায় শহীদ মিনারের সামনে এবং গণিত বিভাগের সামনে হামলা করে। আমার বুকে কিল-ঘুষি ও পেটে লাথি মারে। শহীদ মিনারে থাকা একটি বাঁশ দিয়েও আমাকে আঘাত করে অনিক। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার বান্ধবী তামান্না ও বন্ধু বাসারও আহত হয়েছে।’

অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক বলেন, ‘আমার বন্ধু মাহী আমাকে ফোন দিলে শহীদ মিনারে যাই। গিয়ে দেখি তার [মাহী] সঙ্গে একজনের (আকাশ) কথা কাটাকাটি চলছে। এ সময় আমি অসুস্থ থাকায় পেছনে ছিলাম, বাকিরা গিয়ে আকাশকে মেরেছে।’

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘এটা বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটা বিষয় বলে জেনেছি। ছাত্রদলের কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে শহীদ মিনার চত্বরে একটা মারামারির ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। সহকারী প্রক্টর ফেরদৌস স্যার তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়েছেন। রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ 

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত অনিক গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। এরআগে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রাইট সোসাইটির মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মীদের ভিতি প্রদর্শনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল।

কা/আ  

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত