লন্ডনে মারা গেছেন বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪৪ | আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৪৯
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী সম্প্রতি লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। বিলম্বে প্রাপ্ত এক খবরে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে বিএনপির আলোচিত-সমালোচিত এই নেতা মারা যান। তিনি করোনায় ভুগছিলেন। গত বছর আগস্টে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থও হয়েছিলেন। কিন্তু করোনায় তার ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুনরায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তিনি আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন। হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য দেন।
প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তাঁর মৃত্যু হলেও পরিবারের সদস্যরা সংবাদটি এত দিন গোপন রেখেছিলেন। গতকাল আশিক চৌধুরী ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ একটি স্ট্যাটাস দিলে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে হারিছ চৌধুরীর একটি ছবি যুক্ত করে লেখা ছিল- ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। আশিক চৌধুরীর এ স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘ইন্না লিল্লাহি ... রাজিউন’ লিখে কমেন্ট দিতে থাকেন।
সূত্র জানায়, করোনার ধকল সাময়িকভাবে কাটিয়ে উঠলেও তার ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান হারিছ চৌধুরী।
পারিবারিক সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানায়, আক্রান্ত হওয়ার আগে হারিছ চৌধুরী করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং পুরো ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে। ফলে করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও তিনি ফুসফুস জটিলতায় ভুগছিলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। এ ছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তাঁর গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে যান। রাত ১২টার পর তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সরে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামে করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তাঁর নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন। সূত্র জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যও দেখভাল করতেন ওখানে থেকেই।
হারিছ চৌধুরী স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তাঁর ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত