মোদীর সফর ইস্যুতে ‘উস্কানি’ নয়: সেতুমন্ত্রী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা তৈরিতে কাউকে ‘উস্কানি না দেয়ার জন্য’ আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান। 

কাদের বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে প্রধান মিত্র দেশ ছিলো ভারত, তাই বাংলাদেশ ভারতের সরকারপ্রধানকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, এ আমন্ত্রণ কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়। ভরতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন বা অন্য কোনও বিষয়ের সাথে যোগসূত্র নেই, তিনি আমন্ত্রিত অতিথি।’ 

‘সরকারকে পরাজিত করতে বিএনপি সংগঠিত হতে শুরু করেছে’, বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হলে ভালো, কিন্তু দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে অস্থিরতা তৈরি করার জন্য সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জনগণকে সাথে নিয়ে যেকোনও অপচেষ্টা মোকাবিলা করবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। বিএনপি প্রথম প্রশাসনে রাজনীতিকরণ শুরু করে, আর শেখ হাসিনা সরকার প্রশাসনকে রাজনীতিমুক্ত করেন এবং মেধার সন্নিবেশ ঘটান। বর্তমান প্রশাসন অনেক দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন। রূপকল্প ২০২১, এসডিজি, রূপকল্প ২০৪১ তথা ডেল্টাপ্ল্যানসহ দীর্ঘমেয়াদি ভিশন বাস্তবায়নের জন্য সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান প্রশাসন।’

‘প্রশাসন নয়, বিএনপিই আগাগোড়া ব্যর্থ’ বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। 

‘সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের জন্য আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে’,  বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। উচ্চ ও নিম্ন আদালতে সরকারের কোনরূপ হস্তক্ষেপ নেই। এজন্যই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছে এবং অনেকে সাজা ভোগ করছে।’ 

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বা আওয়ামী লীগ স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় বিশ্বাসী বলেই বিশ্বজিত, নুসরাত, আবরার ও বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দলীয় কর্মীদের রক্ষা করতে যায়নি। আইনের প্রতি সম্মান আছে বলেই বিচারিক প্রক্রিয়াকে কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত করতে চায় না বরং বিএনপিই আইন আদালতকে ঘিরে দ্বিচারিতার আশ্রয় নেয়।‘

তিনি বলেন, ‘বিএনপি মামলায় জিতলে বলে বিচারবিভাগ স্বাধীন আর হারলে বলে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে।’ 

করোনা ভাইরাসের এই ঊর্ধ্বমুখী সময় প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত এবং প্রাণহানির সংখ্যা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে, তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদারের কোনও বিকল্প নেই। লোকসমাগম, মার্কেট, স্টেশন, ফেরি ইত্যাদি এলাকায় অনেকেই মাস্ক পরিধান করছে না। যে জীবনযাপনের জন্য আমরা ব্যস্ত, মাস্ক পরিধান না করার মত অবহেলা আমাদের সেই প্রিয় জীবন থেকে ছিটকে দিতে পারে।’

নিজের এবং পরিবার পরিজন, সন্তানদের কথা ভেবে হলেও শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার আহবান জানান মন্ত্রী। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালানোর অনুরোধ জানান তিনি। 

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এখন থেকে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য দলীয় সভাপতির নির্দেশে আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসহ সকল শাখা এবং সহযোগী সংগঠনসমূহকে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে কর্মসূচি পালনের আহবান জানান ওবায়দুল কাদের। 

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। কর্মসূচির মধ্যে ২৫ মার্চ বেলা ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করবে।