মুন্সীগঞ্জে স্বামীকে হত্যার পর লাশ রান্নাঘরে মাটি চাপা ঘাতক স্ত্রীর

  কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২১, ০৮:২৬ |  আপডেট  : ৬ মে ২০২৪, ১৩:৪৯

স্বামীকে হত্যা করার পর লাশ গুম করার জন্য বসতঘর সংলগ্ন রান্নাঘরের ভেতর মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। স্বামী পরকীয়া প্রেমের সঙ্গে জড়িত থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী আকলিমা বেগম এ হত্যাকান্ড ঘটনা ঘটিয়েছে। হত্যার আগে স্বামী আরাফাত মোল্লাকে খাবারের সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ভোর সকালের দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। এরপর মো: রিয়াজ (২৫) নামের এক যুবকের সহযোগিতায় রান্নাঘরের ভেতর মাটি চাপা দিয়ে লাশ গুম করে রাখে। এমনকি রান্নাঘরে মৃতদেহ মাটি চাপা দিয়ে তার উপরে বসেই প্রতিদিন উনুনে সংসারের সকল কাজকর্ম চলছিলো স্ত্রী আকলিমা বেগমের। কিন্তু এ নির্মম ও বর্বরতার ঘটনা বেশি দিন লুকিয়ে রাখতে পারলেন না ঘাতক স্ত্রী। নিজের স্বামীকে হত্যা করে নিশ্চুপ বোবা মেরে থাকা আকলিমা বেগম নিজের অজান্তেই গল্পের ছলে ফাঁস করে দিয়েছেন লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের ঘটনার কথা। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ এলাকায়। আর এ হত্যাকান্ডের কথা সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার হলে তা দেখতে পেয়ে পুলিশ ঘাতক স্ত্রী আকলিমা বেগমকে গ্রেফতার করে। আর এ হত্যাকান্ডের মূলহোতা স্ত্রী আকলিমা বেগম স্বামী হত্যার ঘটনা পুলিশের কাছে এভাবেই বর্ণনা করেন। এরপরই গতকাল শুক্রবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ এলাকার নিজ বাড়ির রান্নাঘর থেকে দীর্ঘ আড়াই মাস পরে মুন্সীগঞ্জ শহর শাখা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত মোল্লার (৫০) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার সকালে আরাফাত মোল্লার স্ত্রী আকলিমা বেগমের একটি ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর সে ভিডিও তে দেখা যায়, আকলিমা বেগম তার নিজ স্বামী আরাফাত মোল্লাকে যেভাবে হত্যা করেছে তার বর্ণনা করছেন। আর এই সোস্যাল মিডিয়ার তথ্য পেয়ে পুলিশ ঘাতক স্ত্রীকে গ্রেফতার করেন।

জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, আকলিমা বেগমকে গ্রেফতার করার পর সে স্বীকারোক্তিমূলক তথ্য দেয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বসতঘর সংলগ্ন রান্নাঘর থেকে মাটি চাপা অবস্থায় আরাফাত মোল্লার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামীর পরকীয়া প্রেমের জের ধরেই এ হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। ওসি আরও জানান, পুলিশের তদন্তে ঘটনার কোন ক্লু না পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই নিখোঁজের দিন থেকেই আরাফাত মোল্লার ব্যবহার করা মোবাইল ফোন নিজ বাড়ীতেই বন্ধ পাওয়া যায়, এমন তথ্য নিশ্চিত হয়ে স্ত্রী ও মেয়ের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করছিল পুলিশ।

মুন্সীগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ উল-ইসলাম জানান, মুন্সীগঞ্জ শহর শাখা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত মোল্লা গত ২ মে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় ১৫ মে তার স্ত্রী আকলিমা বেগম মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এর প্রেক্ষিতে আরাফাত মোল্লাকে পুলিশ খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে ৩০ মে দ্বিতীয় দফায় আকলিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি বিভিন্নভাবে নানা দিক খতিয়ে তদন্ত করছিল পুলিশ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত