মুন্সীগঞ্জে ওয়ার্ড আ”লীগ সভাপতিকে হাত পা বেধে পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

  মুন্সীগঞ্জ  প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:২০ |  আপডেট  : ৩ মে ২০২৪, ০৯:৪০

মুন্সীগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মো. লিটনকে মেরে হাত পা বেধে পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম [সাগর ফকিরের] কর্মি সমর্থকরা লিটনকে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে হাত পা বেধে পানিতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ করেন লিটনসহ তার পরিবারের লোকজন। 

এ ছাড়া লিটন ও তার পরিবারের উপর শনিবার (২৫ ডিসেম্বর ) দুপুরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, দুপুরে নৌকা প্রতিকের সমর্থকরা বাইনকাইচ গ্রামের লিটনসহ তার পরিবার ও স্বতন্ত্র প্রতিকের কর্মিদের উপর হামলা করে। ওই গ্রামের লোকজন  জানান, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নৌকা প্রতিকের কর্মি আবদুল্লা, ফাহাদ, রফিক এর নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় আমরা ভয়ে পালিয়ে পাশের টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় গিয়ে আশ্রয় নেই। আমাদের না পেয়ে আমাদের গ্রামের মা বোনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গেছে নৌকা প্রতিকের লোকজন।  

ভুক্তভোগী হাজী দেলোয়ার, এসহাক মাঝি ,মো. জুয়েল শেখ বলেন, বেশ কয়েকদিন যাবৎ নৌকা প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা আমরা আনারস প্রতীকের নির্বাচন করায় আমাদের বাইনকাইচ গ্রামে হামলা করে আসছে। তাদের হামলায় আমরা বাড়িঘরে থাকতে পারছিনা। পাশের টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় গিয়ে আমরা রাতে আশ্রয় নিচ্ছি। ভিকটিম শেখ লিটন  বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীরা বেশ কিছুদিন যাবৎ আমাকে মারার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি তাদের ভয়ে কয়দিন যাবৎ বাড়ি ছেড়ে বিভিন্নস্থানে পালিয়ে বেরাচ্ছি। 

গত শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আমি আমার বাড়ি হতে পালিয়ে পাশের বাড়িতে ঘুমাতে যেতে ছিলাম। এ সময় নৌকা প্রতীকের সমর্থক আমাদের এলাকার মোবারক মেম্বার এর ছেলে আবদুল্লাহ, ফাহাদ, রফিক শাহজাহান, মিন্টুসহ ২০/২২জন আমাকে মারধর করে। পরে আমার হাতপা বেধে পুকুরের মধ্যে ছুড়ে ফেলে দেয়। 

আমি ওই পুকুরে থাকা একটি কচুরীর ভিটার মধ্যে আমার মাথা ছিলো সমস্ত শরীর পানির মধ্যে ছিলো। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি । ৩ ঘন্টা পরে রাত ৩ টার দিকে আমাকে আমার পরিবারের লোকজন অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে টঙ্গীবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র হাসপাতালে নিয়ে আসে। সকালে দেখি আমি হাসপাতালে আছি। 

প্রত্যক্ষদর্শী বাইনকাইচ গ্রামের আবু সাইদ এর স্ত্রী সানোয়ার বেগম বলেন, লিটন ভাইকে যখন আমাদের বাড়ীর সামনের পুকুরে হাত পাঁ বেধে ফেলে দেয় তখন আমি শব্দ পেয়ে ঘর হতে বের হয়ে দেখি ১৫/২০জন লোক দাড়িয়ে আছে । 

আমাকে তারা দরজা খোলায় খুব জোরে ধমক দেওয়ায় পরে আমি তাদের ভয়ে দরজা বন্ধ করে বসে থাকি। এ ব্যাপারে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মোতালেব শেখ বলেন, নৌক প্রতীকের প্রার্থী ও তার লোকজন আমার কর্মীদের একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আমার কর্মী‌কে হাত পা বেঁধে পানিতে ফেলে দিয়েছে। এর আগেও আমার কর্মী‌দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের কর্মিদের হয়রাণী করছে। 

এ ব্যাপারে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম [সাগর ফকির] বলেন, লিটন মামলার আসামী। রাতে পুলিশ তাকে ধরতে অভিযান চালিয়েছিলো। সে ভয়ে লাফ দিয়ে পুকুরে পরেছে। পরে আনারস প্রতীকের কর্মীরা আমার কর্মী হৃদয়কে মারধর করেছে। এ ব্যাপারে লৌহজং থানা ওসি (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক আমা‌দের‌কে  বলেন, গতকাল রাতে পুলিশ ওই এলাকায় একটি মামলার এজাহারনামীয় আসামীকে ধরতে গেলে সে ভয়ে পানিতে লাফ দিয়ে পরে যায়। কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি।   

শনিবার দুপুরে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কোন পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি । অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত