মালদ্বীপ ছাড়তেই হচ্ছে ভারতীয় সেনাদের

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৬ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৪, ০২:২১

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু (ফাইল ছবি)

ভারত-বিরোধী অবস্থানে অটল রয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনারা আগামী মে মাসের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ দেশ ছেড়ে যাবে। এ বিষয়ে দিল্লি ও মালে একমত হয়েছে।

এমনকি অন্য কোনও দেশকে মালদ্বীপের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বা তা খাটো করতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। মালদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের ভারত-বিরোধী অবস্থানে অটল থেকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজু আজ পার্লামেন্টে বলেছেন, মালদ্বীপ ‘কোনও দেশকে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বা তা ক্ষুণ্ন করতে’ অনুমতি দেবে না।

স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, ভারতীয় সৈন্যরা আগামী ১০ মের মধ্যে মালদ্বীপ ত্যাগ করবে এবং এ বিষয়ে নয়াদিল্লি ও মালে একমত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এনডিটিভি বলছে, সোমবার দেশের পার্লামেন্টে ভাষণ দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহম্মদ মুইজ্জু। বিরোধী দলগুলোর যারা মুইজ্জুর ভারত-বিরোধী অবস্থানের সমালোচনা করে থাকে তারা এ দিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বয়কট করে।

সংসদ সদস্যদের সামনে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু জানান, মালদ্বীপে তিনটি বিমান চলাচল প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তার মধ্যে একটি থেকে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করা হবে। আর আগামী মে মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বাকি দুটি প্ল্যাটফর্ম থেকেও ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু আরও বলেন, ‘মালদ্বীপ ভারতের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না। আমরা অন্য কোনও দেশকে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বা  এটাকে খাটো করতে দেব না।’

এর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর গত মাসে প্রথম চীন সফর শেষে দেশে ফেরার পর মালদ্বীপকে দেওয়া সামরিক সরঞ্জাম এবং ওই অঞ্চলে মানবিক কার্যক্রমে সহায়তা করার কাজে নিয়োজিত ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দিয়েছিলেন মুইজ্জু।

ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ দেশটিতে বর্তমানে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ৭৭ জন সদস্য রয়েছে। সৈন্যদের পাশাপাশি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর ১২ জন মেডিক্যাল কর্মকর্তাও মালদ্বীপে মোতায়েন রয়েছেন। দেশটির প্রত্যন্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের মানবিক এবং চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য সৈন্যরা দেশটিতে অবস্থান করছেন। মালদ্বীপকে ভারত দুটি উড়োজাহাজ ও একটি ডর্নিয়ার বিমান দিয়েছে; যেগুলো বেশিরভাগ সময় সামুদ্রিক নজরদারি, তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান এবং চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়। আর এসব কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেন ভারতীয় সৈন্যরা। ভারতের প্রথম উড়োজাহাজ এবং ক্রুরা মালদ্বীপে প্রথমবারের মতো কাজ শুরু করে ২০১০ সালে; যখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন মোহামেদ নাশিদ।

গত বছরের নভেম্বরে চীনপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত মালদ্বীপের ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু আসার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে ব্যাপক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এমনকি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাছ ধরার তিনটি নৌকায় চড়ে মালদ্বীপের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) প্রবেশ করায়, সেই বিষয়ে ভারতের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে মালদ্বীপ। মালদ্বীপের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

 আরও জানতে > ভারতকে আবারও ধাক্কা, তুরস্কের সঙ্গে ড্রোন কেনার চুক্তি করলো মালদ্বীপ 

 

সা/ই

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত